মহিলা ক্রিকেট দল গঠনেও দুনম্বরি! সচিব অতনু ভট্টাচার্যের হস্তক্ষেপ

ইকবাল লস্কর, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ আগস্ট : শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট দল গঠন নিয়ে ডামাডোল অব্যাহত। ছেলেদের অনূর্ধ্ব১৯ দল গঠন নিয়ে অনিয়মের পর এবার অনূর্ধ্ব উনিশের মহিলা দল গঠনেও দু নম্বরি ধরা পড়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত জানা গেছে, সচিব অতনু ভট্টাচার্য হস্তক্ষেপ করে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
খেলাধুলার সংস্থায় বিভিন্ন পদে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আসা উচিত। এমনটা হলে নাকি খেলাধূলার মঙ্গল। একমাত্র প্রাক্তনরাই নাকি খেলোয়াড়দের অভাব অভিযোগ তুলনায় ভাল বোঝেন। সমস্যার সমাধান সূত্র নাকি দ্রুত বের করেন। এরচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে প্রতিভার প্রকৃত মূল্যায়ন হয়ে থাকে। প্রতিভা খুঁজে বের করা থেকে শুরু করে খেলোয়াড় গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। এমন বুলি এখানকার ক্রীড়াঙ্গনের আনাচে কানাচে প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু আদতে সেটা নয়। বরং তুলনায় এই সব প্রাক্তনরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। এর প্রমাণ গত কয়েকদিনে পাওয়া গেছে।

অতীতেও একাধিক বার এই ধরনের ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। এবারও এর ব্যাতিক্রম হল না। তবে এবার বাধ সাধলেন সচিব অতনু ভট্টাচার্য। ক্রিকেট সচিব নিরঞ্জন দাসের ঘোষিত দলের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছেন তিনি। শিলচরের ক্রীড়াঙ্গনে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার তুফান চলছে। এর কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে ক্রিকেট শাখার তুঘলকি কাণ্ডকারখানা। অথচ এই শাখার সহ সভাপতি ও সহ সচিব থেকে শুরু করে শাখা সচিব এবং তাঁর সহকারী সচিব সহ একাধিক সদস্যের সিংহভাগ প্রাক্তন ক্রিকেটার। শাখা গঠনে এঁরা গুরুত্ব পেয়েছেন মূলত প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসেবে। কিন্তু পুরো শাখাই আজ ঠুটো জগন্নাথের ভূমিকায়। নিয়ম নীতির উর্ধেব উঠে এসব কাজ দিব্যি করে চলেছেন।

বিষয়টি মাথা চাড়া দিয়েছে অনূর্ধ্ব ১৯ মেয়েদের জেলা দল গঠনকে কেন্দ্র করে। ক্রিকেট সচিব নিরঞ্জন দাস ঘোষিত দল থেকে ১০ জন ওভার-এজড মহিলা ক্রিকেটারকে ছেঁটে ফেলেছেন সচিব অতনু ভট্টাচার্য।

নতুন করে মাত্র ১২ জনের দল গড়েছেন। এমন একটা দলের কাছ থেকে ভাল পারফরম্যান্স আশা করাটা উচিত হবে না। তবে এই ঘটনায় অবশ্যই লজ্জায় ফেলে দিল শাখার সঙ্গে জড়িত ছোট বড় সব কর্মকর্তাকে। এরপরও এঁরা বহাল তবিয়তে। অথচ অতনু ভট্টাচার্য খেলোয়াড় নন। সংস্থায় তাঁর অভিজ্ঞতা তুলনায় বহুগুণ কম। এমন এক সচিব দশ ওভার-এজড খেলোয়াড়কে ছেঁটে দিলেন।

এই ঘটনা টুর্নামেন্ট ভেন্যু হাইলাকান্দিতে ঘটলে তো শিলচর দলের সাসপেনশন নিশ্চিত ছিল। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে তাহলে এতোদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে কীসের উন্নয়ন হয়েছে। অনূর্ধ্ব১৯ ছেলেদের জেকে বরুয়া ট্রফি আন্তঃজেলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে শিলচর রীতিমতো নাকানিচোবানি খেয়েছে। মোট ৮ খেলোয়াড় ওভার-এজড ছিল। ফলে প্রথম ম্যাচে শিলচরকে মাঠে নামতে দেয়নি অসম ক্রিকেট সংস্থা। অবশ্য কার্বি আংলংয়ের করুণায় রি-ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে শিলচরের। সেই প্লেয়ার রেজিস্ট্রেশনে স্বাক্ষর করেছেন নিরঞ্জন দাস। নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনে সচিব কিংবা সহ সচিবের স্বাক্ষর করার কথা।

এই ঘটনায় অসম ক্রিকেট সংস্থা কড়া অবস্থানে। বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে শিলচর ডিএসএকে। এমনকি এসিএর সভায় এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপরও মেয়েদের জেলা দলে আরও দশ ওভার-এজড ক্রিকেটারকে কীসের ভিত্তিতে নেওয়া হল? এতে কি শিলচরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে না? এতোসবের পর কি এখানকার ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকরা ফের বলবেন সংস্থার পদে আসুক প্রাক্তন খেলোয়াড়রা। কারণ, এঁরা তো খেলোয়াড় ও খেলাধূলার ক্ষতি সহ নিজ জেলার সুনাম ক্ষুন্ন করছেন।

Spread the News
error: Content is protected !!