সমাজ-জীবনের ইতিহাসের এক চিরস্মরণীয় অধ্যায়, পঞ্চভূতে বিলীন জুবিন
বরাক তরঙ্গ, ২৩ সেপ্টেম্বর : চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন প্রাণের শিল্পী জুবিন গর্গ। আজ থেকে তিনি পরিণত হলেন অসমিয়া সমাজ-জীবনের ইতিহাসের এক চিরস্মরণীয় অধ্যায়ে। এই অকল্পনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায়ের ক্ষণকে সাক্ষী রইল সমগ্র অসম। জুবিন গর্গ বিলীন হলেন ধরার বুকে চিরদিনের জন্য। সোনাপুরের কমারকুচিতে সম্পন্ন হলো তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হলো প্রিয় শিল্পীকে।

মানতে না চাওয়া এক নির্মম সত্য আজ মেনে নিতে বাধ্য সবাই। নিস্তব্ধ, অসহায় প্রতিটি হৃদয়। শেষবারের মতো স্বামীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানালেন স্ত্রী গরিমা শইকিয়া গর্গ। নিজের সন্তানকে শেষবারের মতো স্নেহে ছুঁয়ে বিদায় নিলেন বাবা। এই করুণ দৃশ্য প্রত্যেককে চোখ ভিজিয়ে তুলেছে। উপস্থিত সকলে নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রিয় শিল্পীকে।

প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন, এরপর একে একে উপস্থিত সকল বিশিষ্টজন শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান জুবিন গর্গের প্রতি। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন তিনি শিল্পীর দেহে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও কিরেন রিজিজুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অসম বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈমারি, বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালসহ বিভিন্ন জাতীয় ও জনজাতীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

লাল চন্দন কাঠে সম্পন্ন হল প্রাণের শিল্পীর সৎকার। মন্ত্রোচ্চারণ, গীতা পাঠ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো সমগ্র প্রক্রিয়া। শেষবারের মতো প্রিয় শিল্পীকে দেখতে সোনাপুরে ভিড় করল লাখো অনুরাগী। গেয়ে উঠল তাঁর প্রিয় গানগুলো। মহামানবের বিদায়ের ক্ষণে ভেসে গেল অশ্রুধারায় সমগ্র জনতা। কিন্তু সকলের দুঃখ-বেদনাকে সঙ্গী করে পঞ্চভূতে বিলীন হলেন জনতার শিল্পী জুবিন গর্গ।