বিদ্যুৎ সঙ্কটে বাংলাদেশ, সাপ্লাই কমিয়ে দিল আদানি পাওয়ার

২ নভেম্বর : আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড বাংলাদেশে ইলেকট্রিক সাপ্লাই দেওয়া কমিয়ে দিল। মূলত বিল না দেওয়ার জন্যই এই ইলেকট্রিক সাপ্লাই কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের পিএলসি ডেটা অনুসারে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই আউটপুট কমিয়ে দেয়। এবার বাংলাদেশে মাত্র ৭০০ মেগাওয়াট সাপ্লাই হচ্ছে বলে জানা যায়। এতে দেশব্যাপি বিদ্যুৎ সঙ্কট বেড়েছে। রাতে দিনে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। কার্তিক মাসে অসহনীয় গা-জ্বালা গরমের সাথে বিদ্যুতের ঘনঘন আসা-যাওয়া খেলায় অতিষ্ঠ শহর এবং গ্রামের বাসিন্দারা। বিদ্যুতের অভাবে থমকে গেছে উৎপাদনের চাকা। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশ এবং বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত চট্টগ্রামের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। রাতে দিনে দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামের পরিস্থিতি আরও নাজুক। সেখানে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ মিলছে না।

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তাতে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়নি। উন্নয়নের নামে লুটপাট আর বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠীকে অনৈতিক সুবিধা দিতেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জ্বালানি নির্ভর সরকারি-বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন এক একটা সাদা হাতিতে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে বর্তমান বিদ্যুৎ সঙ্কটের অন্যতম কারণ ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎখাতে একক আধিপত্য। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। মাতারবাড়ি, বাঁশখালী পায়রা, ও রামপালে কয়লা প্রদানে চড়া দাম চাওয়া, বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে চাপও প্রদান এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে অর্ধেকের নিচে নামিয়েছে তারা। যে কারনে দেশব্যাপি বিদ্যুৎ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হাসিনার আমলে করা ‘একতরফা’ চুক্তির সুযোগ নিচ্ছে আদানি।

হাসিনার সময়ে গত জুলাই থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার বাড়তি দাম ধরে বিদ্যুৎ বিল করছে আদানি। বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে চাপও দিচ্ছে। অথচ গত বছরই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কয়লার দাম নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এরপর দাম কমাতে রাজি হয় আদানি। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। তবে এক বছর পর এখন আবার ২২ শতাংশ বাড়তি দাম চাইছে আদানি। এদিকে হাসিনার ভারতে পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বড় দায়িত্ব পেলেও অভিযোগ আছে উপদেষ্টার অফিস না করে একটি জাতীয় দৈনিকে কলাম লেখায় ব্যস্ত থাকেন তিনি। তাই বিদ্যুৎ সঙ্কট দূরীকরণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এই সঙ্কট আগামী দিনে বাড়বে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ সঙ্কটে বাংলাদেশ, সাপ্লাই কমিয়ে দিল আদানি পাওয়ার
বিদ্যুৎ সঙ্কটে বাংলাদেশ, সাপ্লাই কমিয়ে দিল আদানি পাওয়ার

Author

Spread the News