স্ত্রীর সঙ্গে একটা সেলফি! তাতেই নিরাপত্তাবাহিনীর নজরে চলে আসেন চালাপাতি
২৪ জানুয়ারি : নিজের চলাফেরা নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন মাওবাদী নেতা রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চালাপাতি (Maoist Leader Chalapathi)। দুর্ধর্ষ লড়াকু বলে তাঁর একটা বাড়তি পরিচয় রয়েছে। নিজেকে সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতেন। পুলিশ তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজেছে। নাগাল পায়নি। কারণ চালাপাতিকে চিনতেন না পুলিশকর্তারা। তাঁকে চিনিয়ে দিল একটি বাতিল হওয়া ফোনের সেলফি। তাঁকে ঘিরে কয়েক দশক ধরে যে রহস্য বিরাজ করেছে, তা খুলে দিয়েছে সেই নিজস্বী।
স্ত্রী অরুণার সঙ্গে চালাপাতির নিজস্বী এক পরিত্যক্ত স্মার্টফোনে মিলেছে। নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে তা যেন ইউরেকা। তাকে নিকেশ করতে রীতিমতো পরিকল্পনা করে লড়াইয়ে নামে ছত্তিশগড়, ওডিশা ও সিআরপিএফ-এর যৌথবাহিনী। ওডিশা-ছত্তিশগড় সীমানায় গড়িয়াবন্দের জঙ্গলে দু’তরফের গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় চালাপাতির। প্রথাগত শিক্ষা তেমন না থাকলেও ইংরেজি, হিন্দি, তেলুগু ও ওড়িয়াতে সাবলীল ছিলেন এই মাওবাদী নেতা। তাঁর সামরিক কুশলতা তাঁকে গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী করে তুলেছিল।
চালাপাতি জনযুদ্ধ ও একাধিক নিষিদ্ধ গোষ্ঠীকে একজোট করে ২০০৪ সালে সিপিআই মাওবাদী গঠন করেন। গেরিলা যুদ্ধে তাঁর দক্ষতা তাঁকে নিষিদ্ধ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করে তোলে। ক্রমেই ওপরে উঠতে থাকেন। ওডিশার অনুন্নত কালাগান্ডি, কন্ধমাল জেলায় একের পর এক মাওবাদী অভিযান শুরু করে সংগঠনের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেন।
জঙ্গলে থাকাকালীনই অরুণা ওরফে চৈতন্য বেঙ্কট রবির সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। ক্রমে অরুণার সান্নিধ্যে আসেন চলপতি। অরুণা তখন অন্ধ্র-ওডিশা সীমানায় ওডিশা বর্ডার স্পেশাল জোনাল কমিটির ডেপুটি কমান্ডার। জঙ্গল জীবনেও তখন এক অন্য স্বাদ। পরে তাঁরা বিয়ে করেন। তাঁদের সেই জীবন নিরাপত্তাবাহিনীর কাছেও একটা রহস্যের মতো। তবে সব রহস্যের উন্মোচন ঘটিয়েছে আট বছর আগের তোলা সেলফি।
সরকারি আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অন্ধ্রপ্রদেশে মাওবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় পরিত্যক্ত মোবাইলটি পান নিরাপত্তাকর্মীরা। ২০১৬ সালের মে মাসের ঘটনা। তারপর থেকেই তাঁর চলাফেরা হয়েছে মেপেজুপে। তাঁর পাহাড়ায় নিয়োজিত হয় এক ডজন ক্যাডার। মধ্য ষাটের এই মাওবাদী নেতার জন্ম অন্ধ্রের চিত্তুরে। থাকতেন ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার দারাভায়।
খবর : উত্তরবঙ্গ সংবাদ।