পুণে ধর্মীয় দাঙ্গা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন

২ আগস্ট : ফের ধর্মীয় দাঙ্গা শুরু হয়েছে পুণেতে। ভাঙচুর করা হল শিবাজির মূর্তি, হামলা মসজিদে, সব মিলিয়ে ফের অগ্নিগর্ভ মহারাষ্ট্রের পুণে। শুক্রবার পুণের দৌন্ড তালুকের ইয়াভাত গ্রামে একটি মসজিদে পাথর ছোঁড়ার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠেন সেই এলাকার দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন।

রীতিমতো মারপিট, দাঙ্গা শুরু হয়। এরপরই উত্তেজনা চরমে ওঠে। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে, গত ২৬ জুলাই। যখন ইয়াভাত গ্রামের একজন বাসিন্দা সেখানকার রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে অবস্থিত নীলকান্তেশ্বর মন্দিরে গিয়ে হামলা চালায় এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি ভাঙচুর করেন। তখনই পুরো এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর পরিস্থিতির বেগতিক দেখেই সেই এলাকার বিজেপি বিধায়ক গোপীচাঁদ পাদালকর দলীয় কর্মীদের নিয়ে একটি সভা করেন এবং মূর্তি ভাঙার ঘটনার প্রতিবাদে ইয়াভাত গ্রামে একটি সমাবেশ করেন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। এরপরেই শুক্রবার, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিতর্কিত পোস্ট ভাইরাল হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যায়। কিছু মানুষ মসজিদে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন। এরপরেই গ্রাম এবং আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।

তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছছে। এখন সেই এলাকায় বিপুল সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অর্থাৎ ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগেই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় হিন্দু সংগঠনগুলি বলছে যে, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ছড়ানোর জন্যেই ইচ্ছাকৃত ভাবে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। যার ফলে হিন্দু সমাজের অনুভূতিতে গভীর আঘাত লেগেছে। সংগঠনগুলি দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে, ইয়াভাত এবং আশেপাশের এলাকার গ্রামবাসীরা এদিন গ্রামটির বাজার, স্কুল এবং জনসাধারণের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছেন। গ্রামবাসীরা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেছেন এবং প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তবে পুলিশ পুরো এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে এবং যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে।

এই প্রসঙ্গে পুনের এসপি সন্দীপ সিংহ গিল জানিয়েছেন, ‘আজ ইয়াভাত গ্রামে, দুপুর ১২টা থেকে ১২:৩০ টার মধ্যে, পুলিশ খবর পেয়েছিল যে, এক যুবক তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুকে একটি আপত্তিকর স্ট্যাটাস পোস্ট করেছে। এই অভিযোগের পর, যুবককে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পোস্টকারী ছিলেন সৈয়দ নামে এক ব্যক্তি, তাঁকে এখন হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এর পরে, কিছু গ্রামবাসীও থানায় পৌঁছয়। কিন্তু ততক্ষণে এই বার্তাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এদিকে এর আগে গ্রামে আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল, যার কারণে পরিবেশ উত্তেজনাপূর্ণ ছিলই। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের অনুভূতিতে ইতিমধ্যেই আঘাত লেগেছে। এর ফলে কিছু লোক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ আহত হননি। বর্তমানে পুলিশের তৎপরতায় গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
খবর : এই মুহূর্তে।

Spread the News
error: Content is protected !!