স্বনিযুক্তির সম্ভাবনা বাড়ার উদ্দেশ্যে কাজ করুন : মুখ্যসচিব
জনসংযোগ, হাইলাকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১২ জুলাই : বরাক উপত্যকা সফরে আসা রাজ্যের মুখ্যসচিব ড. রবি কোটা শনিবার হাইলাকান্দি জেলা আয়ুক্তের সভাকক্ষে হাইলাকান্দি জেলার সরকারি প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে সমস্যা ও অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। সভায় মুখ্যসচিব চলতি প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। প্রকল্পগুলির খতিয়ে দেখার সময় আধিকারিকদেরকে এমনভাবে কাজ করে যাবার পরামর্শ দেন যাতে করে উপত্যকার নিযুক্তি প্রার্থীরা চাকরির জন্য বাইরে না গিয়ে এখানে স্বনিযুক্তি বা নিযুক্ত লাভ করতে পারেন।
সভায় সিভিল হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট জানান, হাসপাতালে ১০০টি শয্যা থাকলেও বর্তমানে ১৩০টি শয্যার ব্যবস্থা করে রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে ১৫ টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৫টি বেড চালু রাখা সম্ভব হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং জিএনএম নার্স না থাকায় বাকি আইসিইউ বেড এর পরিসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে সভায় জানানো হয়। শিক্ষা বিভাগের কাজকর্ম খতিয়ে দেখার সময় চা বাগান এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে সপ্তাহে দুইদিন বিদ্যালয়ের মাধ্যাহ্ন ভোজনে যে ডিম দেওয়া হচ্ছে তার গুণগত মান উন্নত রাখতে নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। শিক্ষা সেতু অ্যপ-এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ২০ শতাংশ কমেছে বলে সভায় বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান। জেলার ১২৩১টি বিদ্যালয়ের ৯৬ হাজার ১১০ জন পড়ুয়াকে প্রধানমন্ত্রী পোষন অর্থাৎ মাধ্যাহ্ন ভোজন দেওয়া হচ্ছে। জেলায় যে ৩২৬ জন ছাত্র-ছাত্রী মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল তার কারন নির্ণয় করে ৪৭ জনকে ইতিমধ্যে অধ্যয়নে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। জেলায় ২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেলি এডুকেশন, ৯৯ টিতে স্মার্ট ক্লাস এবং ২০ টিতে ভার্চুয়াল ক্লাস করার সুবিধা রয়েছে বলে শিক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়।
পূর্ত ভবন বিভাগ থেকে জানানো হয়, ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে আয়নাখালে নির্মীয়মাণ মডেল উইমেন কলেজটির কাজ এ মাসেই শেষ হবে। কাটলিছড়ায় ৬২ কোটি টাকায় নির্মীয়মান আইটিআই এবং পলিটেকনিকটির কাজ আগামী অক্টোবর মাসে শেষ হবে। এছাড়া জেলায় নির্মীয়মান ৮ টি জগন্নাথ কমিউনিটি হলের কাজ আগামী ৩১ অক্টোবর শেষ হবে। পাশাপাশি রণটিলায় তিন কোটি ৫১ লক্ষ টাকায় নির্মীরমান মেমোরিয়াল কলেজটির কাজ ১০ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং আগামী বছরের অক্টোবরে তা শেষ হবে।
পিএইচই বিভাগ থেকে জানানো হয়, হাইলাকান্দি শহরের জন্য আগামী ৩০ বছরের জন্য পানীয় জলের সুবন্দোবস্তের জন্য ৭২. ৭৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয় জেলার ৮৬ হাজার সক্রিয় কৃষকের মধ্যে ৭২ হাজার ৬০৭ জন প্রগতিশীল কৃষককে প্রধানমন্ত্রী কিষানের উনিশ তম কিস্তির অর্থ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব ড. রবি কোটা সরকারি সব বিভাগের কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন এবং এগুলি দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।
সভায় অংশ নিয়ে জেলা কমিশনার নিসর্গ হিভারে জানান ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্ত-রাজ্যিক সীমান্ত থাকা মিজোরামের সীমান্তে বর্তমানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রয়েছে। সীমান্তে ৬ টি স্থায়ী বিওপি এবং ৪ টি অস্থায়ী বিওপি সীমান্তে নজরদারি করছে বলে উল্লেখ করে জেলা কমিশনার জানান, প্রতি মাসে সীমান্তবর্তী জেলার ডিসি এবং এসপিদের মধ্যে টেলিফোনিক বার্তালাপ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার সব বিভাগের শীর্ষ আধিকারিক সহ সিনিয়র পুলিশ সুপার অমিতাভ সিনহা অংশ নেন। ড. কোটা এরপর জেলা আয়ুক্তের অফিসকক্ষে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও এক বৈঠকে মিলিত হন।