সংস্কৃত ভারতী ও খুশি স্মৃতি সংস্থার গুরুপূর্ণিমা পালন শ্রীভূমিতে
মোহাম্মদ জনি, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ১১ জুলাই : পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সহজতম ভাষা হল সংস্কৃত। অন্যান্য ভাষার মতো তেমন কঠিন কিছু নেই ভারতের এই প্রাচীন ভাষায়। এমনকি কম্পিউটারের কাছে খুব সহজ ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে সংস্কৃত। শুক্রবার সংস্কৃত ভারতীর শ্রীভূমি শাখা ও সামাজিক সংগঠন খুশি স্মৃতি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গুরু পূর্ণিমা উৎসবে একথা বলেন সংস্কৃত ভারতীর দক্ষিণ আসাম প্রান্তের অধ্যক্ষ তপোময় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সংস্কৃত ভারতী প্রতিষ্টালগ্ন থেকেই গুরু পূর্ণিমা উৎসব পালন করে আসছে। ভারতীয় পরম্পরা অনুযায়ী গুরুর স্থান অনেক উপরে। ভগবান শ্রীরামচন্দ্র, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, ছত্রপতি শিবাজী রানা প্রতাপ সিং সহ প্রত্যেকেই গুরুর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। শিষ্য যখন অনেক উপরে পৌঁছে যায় তখন গুরুরা খুবই আনন্দিত হন বলে মত ব্যক্ত করেন তপোময় ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, জন্মের পর থেকে আমরা যার কাছ থেকে কোন কিছু শিখি তিনিই আমাদের গুরু। গুরুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা প্রত্যেকের কর্তব্য বলে মনে করেন প্রান্ত সভাপতি। সন্ধ্যা ছয়টায় ব্যাসদেবের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হওয়ার পর উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী শ্রাবণী পাল। ধ্যেয় বাক্য পাঠ করার পর স্বাগত বক্তব্যে সংস্কৃত ভারতীর শ্রীভূমি জেলা সমিতির সভাপতি চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, প্রতিটি মানুষের সাফল্যের পেছনে তাঁর গুরুর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গুরুরা অত্যন্ত যত্ন সহকারে শিষ্যদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। পৌরাণিক কাল থেকেই আষাঢ় মাসের গুরু পূর্ণিমা তিথিতে প্রত্যেকে নিজ নিজ গুরুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আসছেন বলে মন্তব্য করেন সংস্কৃত ভারতীর জেলা সভাপতি।
খুশি স্মৃতি সংস্থার আহ্বায়ক অরূপ রায় বলেন, এখন আর আগের মত শিক্ষার্থীরা শিক্ষাগুরুদের সম্মান জানায় না। অনেক শিক্ষার্থীরা শিক্ষাগুরুদের চরণ স্পর্শ করে প্রণাম করতে অনীহা প্রকাশ করে। এজন্য পারিবারিক সংস্কারকে দায়ী করে অরূপ রায় বলেন শ্রেষ্ঠ ও শক্তিশালী ভারত গড়ে তুলতে হলে নিজ নিজ পরিবারকে শ্রেষ্ঠ ও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। পরিবার থেকেই শিক্ষা নিয়ে বড় হওয়ার পর ছেলেমেয়েরা সমাজ তথা রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিবে। এজন্য পরিবারে সুশিক্ষা দেওয়া খুবই প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন খুশি স্মৃতি সংস্থার আহ্বায়ক অরূপ রায়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের শ্রীভূমি শহর সমিতির সভাপতি সৌমিত্র পাল, নৃত্য গুরু সুলেখা দত্ত চৌধুরী, প্রবাল চক্রবর্তী, সুব্রত চৌধুরী, বর্ণিতা সেন, গোপা সেন প্রমুখ।