শিলচর সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণের দাবিতে প্রতিনিধি দলের স্মারকলিপি প্রদান
বরাক তরঙ্গ, ৮ জুলাই : শিলচর সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণ দাবি কমিটির একটি প্রতিনিধি দল জয়েন্ট ডিরেক্টর অব হেল্থের কাছে হাসপাতালের উন্নয়ন ও সেবা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি স্মারকলিপি পেশ করে। প্রতিনিধি দল জানায়, ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বরের ক্যাবিনেট বৈঠকে প্রথমে ১৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতাল আধুনিকীকরণের প্রস্তাব পাস হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য জিও-সার্ভে সম্পন্ন হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাইটস লিমিটেড সার্ভে রিপোর্ট পেশ করার সময় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার আগ্রহ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সরকার ১৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সিভিল হাসপাতালে এই নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জমি তৈরি করতে তথা পুরানো পরিকাঠামো ভাঙতে ৫৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে বলে পিডব্লিডি বিভাগ থেকে সরকারপক্ষকে জানানো হয় এবং তা মঞ্জুরও হয়। পরবর্তীতে কাজের অংশ হিসাবে হাসপাতালের কর্মীদের আবাসন ভেঙ্গে ফেলা হয়। তবে, এরপর হঠাৎ করেই কাজ থেমে যায়। এই নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা আবেদন জানায়, নির্মাণকাজের জন্য যেন হাসপাতালের সেবা কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার দাবি করা হয়।
কমিটি আরও উল্লেখ করে, অসমের গুরুত্বপূর্ণ জনপদের কেন্দ্রে অবস্থিত হলেও শিলচর সিভিল হাসপাতালে অনেক বিভাগের অভাব রয়েছে। কিছু বিভাগ থাকলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। বিশেষ করে, মনোরোগ বর্তমানে একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর চিকিৎসা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এই সমস্যা সমাধানে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের আবেদন জানানো হয়। এছাড়া, পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও চক্ষু বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে নিয়মিত চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এই সমস্যা সমাধানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ নিয়োগের দাবি করা হয়। একইভাবে, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করতে দুজন করে ল্যাব সহকারী ও অভিজ্ঞ নার্স নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এছাড়া, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ চালুর দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
মঙ্গলবার কমিটি জয়েন্ট ডিরেক্টরের কাছে হাসপাতালে এমআরআই যন্ত্র স্থাপনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে দ্রুত এটি বাস্তবায়নের আবেদন করে। এই স্মারকলিপির একটি কপি কাছাড় জেলার জেলাশাসক ও হাসপাতাল সুপারিনটেনডেন্টের কাছেও পৌঁছানো হয়। এদিনের কার্যসূচিতে কমিটির পক্ষে শহরের বিশিষ্ট নাগরিক হরিদাস দত্ত, কমল চক্রবর্তী, দীপঙ্কর চন্দ, খালেদা বেগম, মধুসুদন কর এবং নন্দলাল সাহা অংশগ্রহণ করেন।