আমরা কেবল রাজনীতি করি না, আমরা দেশগঠনের অংশীদারও : কৃষ্ণেন্দু
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২১ জুন : পাথারকান্দি বিধানসভার লোয়াইরপোয়া অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে শনিবারের দিন এক নতুন গতিপ্রবাহ সৃষ্টি করল বিজেপির কার্যনির্বাহী সভা। রাজ্যের মৎস্য পশু পালন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী, পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উঠে এল উন্নয়ন, সংগঠনের দৃঢ়তা এবং কর্মীদের প্রতি দায়িত্ববোধের সুস্পষ্ট বার্তা। শনিবার, লোয়াইরপোয়া মণ্ডল বিজেপির সভাকক্ষে দলীয় নেতাকর্মী দের উপস্থিতিতে সভাস্থলে আয়োজিত হয় এই বিশেষ কার্যনির্বাহী সভা, যেখানে অংশগ্রহণ করেন দলীয় মণ্ডল নেতৃত্ব, জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বুথ পর্যায়ের কর্মী এবং দলের বিভিন্ন মোর্চার সদস্যা সদস্যরা।
কার্যনির্বাহী সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, আজকের সভা কেবল একটি রুটিনমাফিক সাংগঠনিক কর্মসূচি নয়। এটি একটি আদর্শ, একটি প্রতিশ্রুতি উন্নয়নের পথে আমাদের সমাজকে, আমাদের অঞ্চলকে সামনের সারিতে নিয়ে যাওয়ার সভা। আমরা কেবল ভোটের জন্য রাজনীতি করি না, আমরা মানুষের জীবনে সুনিশ্চিত পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজির “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস” দর্শন আমাদের প্রতিটি কর্মীর দিশা। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি বুথ, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে কর্মীদের আরও সক্রিয় ও সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র উপরে সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না, তার বাস্তবায়ন মাটির কাছাকাছি কর্মীদের হাত ধরেই সম্ভব। এতে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পালের স্পষ্ট বার্তা হল উন্নয়নই প্রকৃত রাজনীতি।

এদিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন লোয়াইরপোয়া মণ্ডল বিজেপির সভানেত্রী সম্পা চৌধুরী সোনালী। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি হৃষিকেশ নন্দী, মণ্ডল সম্পাদক কিশোর চৌধুরী, প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি লাল সিনহা, বিজেপি নেতা সত্য নারায়ণ চালিয়া, ধ্রুব চক্রবর্তী, প্রাক্তন জিপি সভানেত্রীর নমিতা গোয়ালা চাষা, জেলা পরিষদ সদস্য অনিলকুমার ত্রিপাঠী, বীণারানি সিনহা ও স্বপন দাস। জেলা বিজেপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এসসি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস, বরিষ্ঠ নেতা নির্মল বণিক, বিভিন্ন মোর্চার নেতৃবৃন্দ ও শতাধিক বুথকর্মী। বক্তারা সভায় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প যেমন উজ্জ্বলা যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, জল জীবন মিশন, স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রকল্প ইত্যাদির সফল বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তারা জানান, কীভাবে এই প্রকল্পগুলি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নত করেছে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। সভায় গৃহীত হয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত: বুথ পর্যায়ে কর্মী তালিকা পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণ যুব ও মহিলা মোর্চার নতুন নেতৃত্বে কার্যতৎপরতা বাড়ানো সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল প্রচার কাঠামো তৈরি বিশেষ ভাবে বিকশিত ভারত অভিযানে’ সর্বস্তরের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

এদিকে, এদিনের এই গুরুত্বপূর্ণ সভার শেষলগ্নে লোয়াইরপোয়া মণ্ডল বিজেপির কার্যনির্বাহী সভার শেষে এক তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্তে দলের সকল পদাধিকারী ও বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে “বিকশিত ভারত” নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যের মৎস্য ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী তথা পাথারকান্দি বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। শপথগ্রহণ পর্বে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, আমরা কেবল রাজনীতি করি না, আমরা দেশগঠনের অংশীদার। আমাদের প্রতিটি কর্মীকে এই বিশ্বাস ও দায়িত্ব নিয়ে এগোতে হবে—যাতে ভারতের উন্নয়নযাত্রা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছায়। তিনি আরও জানান, দলের প্রতিটি স্তরে কর্মীদের জাগ্রত করাই এখন সময়ের দাবি, যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজির ‘বিকশিত ভারত’ ভিশন বাস্তব রূপ পায়। দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন এই বিশেষ মুহূর্তে। শপথের শব্দে মুখরিত হয় সভাস্থল, প্রতিফলিত হয় দলের ঐক্য, শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ। এই শপথগ্রহণের মাধ্যমে লোয়াইরপোয়া মণ্ডলে দলের সাংগঠনিক শক্তি যেমন দৃঢ়তর হল, তেমনই ভবিষ্যতের দিশা নির্ধারণে তৈরি হল এক নতুন অধ্যায়।
