আজকের গাছই আগামী প্রজন্মের সবুজ অভিভাবক : দীপায়ন
বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বন বিভাগ ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সঞ্চালক দফতরের জেলাজুড়ে অনুষ্ঠান
বরাক তরঙ্গ, ৫ জুন : পরিবেশ দিবসে কাছাড় জেলায় এক ব্যতিক্রমী পরিবেশ চেতনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করল কাছাড় বন বিভাগ এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ক সঞ্চালক দফতর সম্মিলিতভাবে। বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক থিম প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা ও সুস্থ জীবনের আহ্বানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠল বিভিন্ন উদ্যোগ, যা শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। কাছাড় বন বিভাগ এক বিশাল সবুজ অভিযানের সূচনা করে হাজার চারা গাছ বিতরণ করে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম চালায়। ছাত্রছাত্রী, গ্রামবাসী, সরকারি আধিকারিক এবং সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে এটি পরিণত হয় এক গণআন্দোলনে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা এবং প্লাস্টিক নির্ভরতা হ্রাসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ছোট ছোট শিশুদের হাতে চারা গাছ আর মুখে সবুজ ভবিষ্যতের অঙ্গীকার যেন পরিবেশ রক্ষায় এক নতুন আশার আলো জ্বেলে দেয়।

অন্যদিকে, কাছাড়ের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সঞ্চালক দপ্তর পরিবেশ বার্তাকে সাংস্কৃতিক সুরে গেঁথে তোলে। স্থানীয় সংগঠন, সাংস্কৃতিক দল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে সচেতনতা মূলক পথনাটিকা ও বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। লক্ষীপুরের ঐতিহাসিক লাবক নাচঘর, শিলচরের তরনী রোড থেকে ধলাইয়ের ছোটজালেঙ্গা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি প্রাঙ্গণ পরিণত হয় বৃক্ষরোপণ ও সৃজনশীল সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্রে।

তরণী রোডের শহিদ বেদী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী উপস্থিত থেকে সাধারণের মধ্যে চারা বিতরণ করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে পরিবেশ রক্ষাকে নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “আজকের গাছই আগামী প্রজন্মের সবুজ অভিভাবক।” তাঁর এই আবেদন উপস্থিত সকলের মনে একটি দৃঢ় বার্তা পৌঁছে দেয়। দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত যেমন উধারবন্দের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, বড়খলার ডলু বাজার এবং সোনাই পুর এলাকার বাসিন্দারাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।

ধলাইয়ের মোড়ে মোড়ে পথনাটকের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।জেলার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একদিনে প্রায় ৩০০টি চারা গাছ বিতরণ করা হয়, যা এই বিশাল কর্মসূচির পরিকল্পনা, পরিসর এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এই পুরো কর্মসূচির সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়নের পেছনে ছিলেন সহকারী কমিশনার তথা জেলা সাংস্কৃতিক আধিকারিক দীপা দাসের নিরলস সমন্বয় এই উদ্যোগকে সফল করে।
