১৭ বছরের অপেক্ষা অবসান, আইপিএল চ্যাম্পিয়ন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স
৩ জুন : দীর্ঘ ১৭ বছরের অবসান। আইপিএল চ্যাম্পিয়ন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি ৯ উইকেট হারিয়ে করে ১৯০ রান তোলে। বিরাট কোহলি করেন ৪৩ রান। জবাবে ২০ ওভার ব্যাট করে ১৮৭ রানে শেষ হয়ে যায় পাঞ্জাবের ইনিংস। ৩ রানে ম্যাচ জিতে ১৮তম আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। অন্যদিকে এবারও ট্রফি অধরা রইল পাঞ্জাব কিংসের।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ১৮তম আইপিএলের ফাইনালে পরস্পর মুখোমুখি হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও পাঞ্জাব কিংস। এদিন টসে জিতে আরসিবিকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। আরসিবি’র হয়ে ব্যাট করতে নামেন বিরাট কোহলি ও ফিল সল্ট। শুরুতেই ঝড় তুললেন ফিল সল্ট। প্রথম ওভারে ছক্কা-চারের সাহায্যে সল্ট অর্শদীপ সিংয়ের বলে তুললেন ১৩ রান। দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় আরসিবি। ভালো শুরু করেও ক্যাচ আউট হলেন ফিল সল্ট। কাইল জেমিসনের বলে শ্রেয়স আইয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তিনি করেন ৯ বলে ১৬ রান। ম্যাচের ৬.২ ওভারে চাহালের বলে আউট হন ময়ঙ্ক আগরওয়াল।

অবশেষে কোহলির ক্যাবিনেটে জায়গা পেল আইপিএল ট্রফি। এদিন সর্বোচ্চ রান বিরাটেরই (৪৩)। ব্যাক টু ব্যাক কোটিপতি লিগ জেতার রেকর্ড অধরা কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্রাত্য অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের। মেগা নিলামে ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল আরসিবি। বেঙ্গালুরুর কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁর মতো স্মার্ট ক্রিকেটারকে দরকার ছিল তাঁদের। মঙ্গল রাতে মেগা ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দিলেন ক্রুনাল। ৪ ওভারে ১৭ রানে জোড়া উইকেট তুলে নেয়। তারমধ্যে রয়েছে প্রভসিমরন সিং এবং জস ইংলিশের উইকেট। দ্বিতীয় জনের উইকেট ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তোলে আরসিবি। জবাবে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৮৪ রানে থামে পাঞ্জাব কিংস। ৬ রানে জেতে আরসিবি।
বিগ ফাইনালে দুশোর কাছাকাছি রান তাড়া করে জেতা সহজ নয়। স্নায়ুর চাপে পড়ে যায় পরে ব্যাট করা দল। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রেও তাই হল। শুরুটা মন্দ করেনি প্রিয়নশ আর্য (২৪) এবং প্রভসিমরন সিং (২৬)। কিন্তু বড় রান পায়নি। ৯ রানে একবার জীবন ফিরে পান প্রভসিমরন। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। শ্রেয়স আইয়ারের উইকেট পাঞ্জাবকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দলকে জেতালেও এদিন ডাহা ব্যর্থ পাঞ্জাবের অধিনায়ক। মাত্র ২ বল ক্রিজে ছিলেন। ১ রানে ফেরেন। এখানেই দেওয়াল লিখন হয়ে যায়। তবে যতক্ষণ ইংলিস ছিল, আশা ছিল। ৩৯ রানে আউট হওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ে যায়। পাওয়ার প্লের শেষে বেঙ্গালুরুর রান ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫। সেখানে পঞ্জাবের ১ উইকেট হারিয়ে ৫২। প্রথম ৬ ওভারের শেষে দুই দলের মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না। কিন্তু ক্রুনালের চার ওভার পার্থক্য গড়ে দেয়। মিডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ। অনেকেই মেগা ফাইনালে টসে জিতে বিপক্ষের ঘাড়ে বড় রান চাপিয়ে দিতে পছন্দ করে। কিন্তু এদিন সেই সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেন শ্রেয়স। সেটাই বুমেরাং হয়ে ফিরল।

এদিন টসে জিতে আরসিবিকে ব্যাট করতে পাঠান শ্রেয়স আইয়ার। বেঙ্গালুরুকে দুশো রানের নীচে বেঁধে রাখে পাঞ্জাব। প্রশংসা করতে হবে বোলারদের। একইসঙ্গে শ্রেয়সের ক্ষুরধার নেতৃত্বের। বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের মধ্যে পার্টনারশিপ গড়তে দেয়নি পাঞ্জাব। একাধিক ব্যাটার শুরুটা ভাল করলেও, অল্প রানের মধ্যে আউট হয়। এই তালিকায় ছিলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল (২৪), রজত পতিদার (২৬), লিয়াম লিভিংস্টোন (২৫) এবং জীতেশ শর্মা (২৪)। বেঙ্গালুরুর সর্বোচ্চ রান বিরাট কোহলির। কিন্তু মন্থর ব্যাট করেন তারকা ক্রিকেটার। চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। নিয়মিত উইকেট হারানোয় একটা দিক ধরে রাখার চেষ্টা করেন কোহলি। খোলস ছেড়ে বেরোতে পারেননি। ৩৫ বলে ৪৩ রান করে আউট হন বিরাট। মাত্র তিনটে চার। স্ট্রাইক রেট মাত্র ১২২.৮৫। অথচ শুরুটা ভালই করেছিলেন ফিল সল্ট। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। নির্ধারিত ওভারের শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তোলে বেঙ্গালুরু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাসিমুখে মাঠ ছাড়েন কোহলি।