ভারতীয় শিক্ষণ মণ্ডল আসাম বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির ৫৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত
বরাক তরঙ্গ, ২৩ এপ্রিল : বুধবার আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভারতীয় শিক্ষণ মণ্ডল আসাম বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি তাদের ৫৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করেছে। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক পীযূষ পাণ্ডে। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় শিক্ষণ মণ্ডল দক্ষিণ আসাম প্রান্তের সভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন রায়। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃত বিভাগের ডক্টর গোবিন্দ শর্মা।
এদিন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সম্পাদক অধ্যাপক দেবোতোষ চক্রবর্তীর স্বাগত ভাষণ এবং উদ্বোধনী বক্তৃতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। উদ্বোধনী ভাষণে অধ্যাপক দেবোতোষ চক্রবর্তী সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গি, লক্ষ্য এবং কার্যকলাপ তুলে ধরেন এবং ভারতীয় মূল্যবোধের চেতনায় ভারতীয় শিক্ষার পুনরুত্থানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

এদিকে ডক্টর গোবিন্দ শর্মা তার মূল বক্তৃতা “মানব গঠন, চরিত্র গঠন এবং জাতি গঠনের জন্য শিক্ষা” তে ভারতীয় শিক্ষার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কে উল্লেখ করেন। প্রাচীনকালে ভারতীয় শিক্ষা কীভাবে যুবকদের সমাজের জন্য বৃহত্তরভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল সেসম্পর্কে আলোকপাত করেন। প্রাচীন লিপি এবং বিবেকানন্দ ও অরবিন্দের মতো মহান জাতীয়তাবাদীদের উদাহরণ তুলে ধরে ডঃ গোবিন্দ শর্মা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন যা মানব গঠন এবং জাতি গঠনে অবদান রাখবে। অধ্যাপক নিরঞ্জন রায় ১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকলের ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তনের কথা উল্লেখ করে তার বক্তৃতা শুরু করেন। অধ্যাপক রায় ব্যাখ্যা করেন যে কীভাবে সমৃদ্ধ শিক্ষা ও অর্থনৈতিক পটভূমি থাকা সত্ত্বেও ভারত ঔপনিবেশিক আমলে উভয় ক্ষেত্রেই ধীরে ধীরে অবনতি লাভ করে। তিনি প্রাথমিক স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এর উপযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক পীযূষ পান্ডে শিক্ষায় গবেষণার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং সামাজিক দিকগুলিতে আমাদের দেশের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি সকলকে সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখার আহ্বান জানান। শান্তি মন্ত্র এবং কাশ্মীরে নিহত নিরীহ প্রাণের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।