শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্ৰে সময়োচিত পদক্ষেপ

বরাক তরঙ্গ, ২০ মার্চ : শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় সুরক্ষা সমিতি, নলবাড়ির উদ্যোগে নলবাড়ি প্ৰেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় সুরক্ষা সমিতি, নলবাড়ির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র কুমার জৈন, উপসভাপতি জ্ঞানেন চক্ৰবৰ্তী, সম্পাদক দিব্যজ্যোতি হালৈ, মুনীন্দ্ৰ দলে , মালতি বসুমাতারী সহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেন যে ১০-১৫ দিন আগে মন্ত্ৰী তথা নলবাড়ির বিধায়ক জয়ন্ত মল্ল রুয়া শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালের দাবীগুলো সম্পৰ্কে আলোচনার জন্য শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় সুরক্ষা সমিতি, নলবাড়ি নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানান। বুধবার মন্ত্ৰীর আহ্বানে সুরক্ষা সমিতির প্ৰতিনিধিরা দুপুর ২টায় জেলা কমিশনার কাৰ্যালয়ের সভাকক্ষে উপস্থিত হয়। সুরক্ষা সমিতির সভাপতি ড° নারায়ণ চন্দ্ৰ শৰ্মার নেতৃত্বে সমিতির প্ৰতিনিধিত্ব করেন সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্ৰ কুমার জৈন, উপসভাপতি জ্ঞানেন চক্ৰবৰ্তী, সহ সম্পাদক মুনীন্দ্ৰ দলে, দিব্যজ্যোতি হালৈ, কাৰ্যকরী সদস্য কুশল পেগু এবং মালতী বসুমাতারি। কেবিনেট মন্ত্ৰী জয়ন্ত মল্ল বরুয়ার অধ্যক্ষতায় ও নলবাড়ির জেলা কমিশনার, নলবাড়ির পুরপতি, শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালের বোৰ্ড মেম্বার ও স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসারদের উপস্থিতিতে সৌহাৰ্দপূৰ্ণ আলাপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির সভাপতি  জনসংখ্যা ও ভৌগলিক পরিসরের দিক থেকে ক্ৰমবৰ্ধমান নলবাড়ি শহরের সঙ্গে জেলার লক্ষ লক্ষ গরীব মানুষের স্বাস্থ্য পরিসেবার জন্য অতীব জরুরী শহীদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালকে অবিলম্বে আগের মতো ২৩৫ শয্যার হাসপাতালে রুপান্তরিত করে পরিসেবা চালুর পাশাপাশি অসামরিক মৰ্যাদা ঘুরিয়ে দেওয়ার দাবী জানান। উক্ত দাবীর প্ৰতি সহমর্মিতা জানিয়ে মন্ত্ৰী অবিলম্বে ১১০টা শয্যার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি প্ৰয়োজন অনুযায়ী শয্যার সংখ্যা বৃদ্ধির প্ৰতিশ্ৰুতি দেন। শয্যার সাথে সংগতি রেখে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কৰ্মী নিয়োগের প্ৰয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলে তিনি প্ৰয়োজন অনুযায়ী তা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন। মন্ত্রী এও বলেন যে আইনি বাধা না থাকলে অসামরিক মৰ্যাদা ঘুরিয়ে দেওয়াও হবে বা সম মৰ্যাদা প্ৰদান করা হবে। মন্ত্রী মেডিক্যাল কলেজ ও সিভিল হাসপাতালের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্বের প্রসঙ্গ তুললে তাঁকে শিলচর, নগাঁও শহরের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে মেডিকেল কলেজ ও সিভিল হাসপাতাল রয়েছে বলে অবহিত করানো হয়। তিনি সমগ্ৰ বিষয়টো গভীর ভাবে অধ্যয়ন করার আশ্বাস দেন।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সুরক্ষা সমিতির নেতৃবৃন্দ নলবাড়ীর বিধায়ক ও কেবিনেট মন্ত্ৰী এবং আসাম সরকারকে হাসপাতালের পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্ৰে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্ৰহণের জন্য ধন্যবাদ জানান।  বিগত ২ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনে অংশগ্ৰহণকারী  নলবাড়ীর জনগণ এবং পরোক্ষ এবং প্ৰত্যক্ষভাবে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া নলবাড়ীর জেলা ও পাৰ্শ্ববৰ্তী জেলার জনসাধারণকে সংগ্ৰামী অভিনন্দন জানান। দু’বছর ধরে আন্দোলনের ধারাবাহিক প্ৰচার চালিয়ে যাওয়ার জন্য সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিক বন্ধুদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়। সুরক্ষা সমিতির দৃঢ়তার সঙ্গে জানায় যে এই বিজয় নলবাড়ী জেলার জনগণের জয়, গণ আন্দোলনের জয়। সরকারের সর্বশেষ প্ৰতিশ্ৰুতি যাতে অক্ষরে অক্ষরে কাৰ্যকরী হয় তার প্ৰতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা সহ শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালকে উন্নত মানের সম্পন্ন আধুনিক চিকিৎসালয় (সুপার স্পেসিয়েলিটি হাসপাতাল ) হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। হাসপাতালে সমস্ত গুরুত্বপূৰ্ণ বিভাগ চালু, প্ৰয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কৰ্মী নিয়োগ, বিভিন্ন বিভাগে স্পেসিয়েলিস্ট চিকিৎসক নিয়োগ ইত্যাদি সম্পৰ্কে যে মতবিনিময় হয়েছে তাকে সামনে রেখে হাসপাতালকে ধাপে ধাপে উন্নত করার দাবিও জানানো হয়।

শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্ৰে সময়োচিত পদক্ষেপ

নলবাডির গরীব সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি চিকিৎসা পরিসেবার অধিকার রক্ষার স্বাৰ্থে  এই সমিতি গঠন করা হয়েছিল। তাই নলবাড়ি জেলার  জনস্বাৰ্থে সমিতি সরকার তথা প্ৰশাসনের দৃষ্টি আকৰ্ষণ করতে থাকবে এবং প্ৰয়োজন অনুযায়ী গণ আন্দোলনও গড়ে তুলবে। জনস্বাৰ্থে  যখনই প্ৰয়োজন দেখা দেবে তখনই সমিতি বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্ৰহণ করবে। উল্লেখ্য যে নলবাড়ি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের অজুহাত দেখিয়ে শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালকে অস্তিত্বহীন করা হয়েছিল। ধারাবাহিক আন্দোলনের চাপে বহিঃ বিভাগের পরিসেবা পুনরায় চালু ও স্বাধীনতা আন্দোলনের শহিদ মুকুন্দ কাকতির  নামে হাসপাতালের নাম অক্ষুণ্ণ রাখতেও বাধ্য হয়েছিল।

Author

Spread the News