যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন এআইএমএসএসের

বরাক তরঙ্গ, ৮ মার্চ : সারা ভারত মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে  কাছার জেলায়ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ এই দিনটিতে আমেরিকার বস্ত্র শিল্পের মহিলা শ্রমিকরা শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক রক্তাক্ত বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের ইতিহাস রচনা করেছিলেন। এই ঐতিহ্যকে স্মরণ করে ১৮৯০ সালে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অফ সোসিয়ালিস্ট ওমেনস যার  সভানেত্রী ক্লারা জেটকিন নারী মুক্তি আন্দোলনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। এই উপলক্ষে আজ সকাল ১১ টায় শিলচর মধ্য শহর সাংস্কৃতিক হলে এক মহিলা সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে কাছার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মহিলারা অংশগ্রহণ করেন। এই সমাবেশ পরিচালনা করতে রেখা ভট্টাচার্য, চঞ্চলা ভর ও  স্বাগতা চক্রবর্তীকে নিয়ে এক সভাপতিমণ্ডলী গঠিত হয়।

সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন রিম্পি বাগতি এবং বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি ড. স্মৃতি পাল। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের কাছার জেলা কমিটির সম্পাদক দুলালী গাঙ্গুলী, খাতিজা বেগম, প্রমূখ। প্রত্যেক বক্তাই তাদের বক্তব্যে আজকের পুঁজিপতি শ্রেনীর স্বার্থ রক্ষাকারী সরকার বিশ্ব বাজারে ভারতীয় পুঁজিপতিদের অধিকার সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে তুলে ধরেন। তারা এও বলেন যে আমেরিকা সহ বিশ্বের বড় বড় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির অবাধ বাণিজ্যের জন্য আমাদের সরকার অর্থনীতিকে খুলে দিচ্ছে। ২ দশক পূর্বে প্রণীত উদারীকরণ ও ব্যক্তিগতকরণের ফলে দারিদ্র ও ক্ষুধার বাইরে যে কিছুই হয়নি তা আজ সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে। এরই কুপ্রভাব মহিলাদের উপর মারাত্মকভাবে পড়েছে।

যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন এআইএমএসএসের

বিশ্বের মানুষের বিবেক, মূল্যবোধ, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, নীতি-নৈতিকতা সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করে মারাত্মক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজ নারীকে বিশ্ববাজারে পণ্যে রূপান্তরিত করেছে। সিনেমা, দূরদর্শন, মোবাইল চ্যানেল এমনকি সংবাদপত্রের পাতায় ও উন্মুক্ত নারী দেহের প্রদর্শন চলছে। প্রতিটি সরকার দেশে অবাধ মদের লাইসেন্স দিচ্ছে, জুয়ার  লাইসেন্স দিচ্ছে ফলে দেশে চলছে ড্রাগস এবং মদের অবাদ কারবার। মানুষকে মাদকাসক্ত, উচ্ছৃংখল, বেপরোয়া, খুনি ও ধর্মান্ধ বানানোর জন্য এক সুপরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে। যার ফলে সমাজে মহিলারা আজ নিরাপত্তাহীনতার শিকার । আজ পুঁজিপতি শ্রেণীর শাসন এবং শোষণে নারী-পুরুষ সকলেই লাঞ্ছিত ও শোষিত। সুতরাং নারীরা তাদের অধিকার সাব্যস্ত করতে হলে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা উচ্ছেদের লক্ষ্যকে সামনে রেখে নারী অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন এআইএমএসএসের

এরপর ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী ছাত্রদের বুকের উপর শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকা পিষে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ৩ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন এআইডিএসওর ডাকে ছাত্র ধর্মঘটের দিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিকেটিং চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের গুন্ডাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ আক্রমণ এবং মহিলা কর্মীদের উপর নির্মম অত্যাচারের প্রতি ধিক্কার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে এক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এরপর, স্লোগান মুখরিত এক মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে সমাপ্ত হয়।

Spread the News
error: Content is protected !!