কন্যা সুরক্ষা, ভবিষ্যৎ সুরক্ষা: শিলচরে পিসি অ্যান্ড পিএনডিটি আইন নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৪ ফেব্রুয়ারি : কন্যাসন্তানের সুরক্ষা ও লিঙ্গ সমতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে শিলচরের সিভিল হাসপাতালের এএমএসএ হলে আয়োজন করা হয় এক সচেতনতামূলক কর্মসূচি। পিসি অ্যান্ড পিএনডিটি (Pre-Conception & Pre-Natal Diagnostic Techniques) আইনকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচি ছিল ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ (BBBP)-এর ১০ম বর্ষপূর্তি উদযাপনের অঙ্গ। জেলা মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগের ‘সঙ্কল্প: জেলা মহিলা ক্ষমতায়ন কেন্দ্র’-এর নেতৃত্বে এই আয়োজন হয়, যেখানে সহযোগিতা করে স্বাস্থ্য বিভাগ, অসম গ্রামীণ জীবিকা মিশন (ARLM) এবং জেলা আইন সেবা কর্তৃপক্ষ (DLSA)।
কর্মসূচিতে এএসএইচএ কর্মী, অক্সিলিয়ারি নার্স মিডওয়াইফ (ANM) এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (SHG) সদস্যরা অংশ নেন। এরা প্রত্যেকেই তৃণমূল স্তরে স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইন সেবা কর্তৃপক্ষের লিগাল এইড কাউন্সেল অ্যাডভোকেট অরুণিমা পুরকায়স্থ। তিনি পিসি অ্যান্ড পিএনডিটি আইনের বিভিন্ন দিক ও এর প্রয়োগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে, “লিঙ্গ-ভিত্তিক ভ্রূণহত্যা শুধুই একটি আইনি অপরাধ নয়, এটি সমাজের এক গভীর ক্ষত, যা নারীর সম্মান ও জনসংখ্যাগত ভারসাম্যকে নষ্ট করে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে যেন প্রতিটি কন্যা সন্তানের জন্ম আনন্দে উদযাপিত হয়, প্রতিরোধ নয়।”
অনুষ্ঠানে বিগত এক দশকে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং অর্জনও তুলে ধরা হয়। মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প যে কীভাবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, তা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করেন অংশগ্রহণকারীরা।


উপস্থিত সকলে প্রতিজ্ঞা করেন, সমাজে কন্যা সন্তানের অধিকার সুরক্ষায় আরও সক্রিয় ভূমিকা নেবেন। এই অঙ্গীকারের প্রতীক হিসেবে হাসপাতাল চত্বরে কন্যা সন্তানের নামে বৃক্ষরোপণ করা হয়, যা সমাজে লিঙ্গ সমতার শিকড় শক্তিশালী করার প্রতীকী পদক্ষেপ হয়ে থাকবে।

সচেতনতার এই উদ্যোগ থেকে বার্তা স্পষ্ট—নারী সুরক্ষা দিয়ে নারী ক্ষমতায়নের সূচনা হয়, এবং পিসি অ্যান্ড পিএনডিটি আইন সেই লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার।