পাথারকান্দিতে অসুস্থ বুনো হাতির মৃত্যু, এক এক করে ১১টি মারা গেল

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১০ ফেব্রুয়ারি : দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং বয়সের ভারে কাবুকাৎ হয়ে অবশেষে পাথারকান্দি এলাকার বুনো হাতির মৃত্যু ঘটল। রবিবার হাতিটির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় লালখিরা বাগানের একটি মন্দিরের পাশে। এমন খবর পেয়ে জেলা বন বিভাগের এসিএফ সামস উদ্দিন লস্কর সহ পাথারকান্দি ফরেস্ট রেঞ্জের কর্মীরা অকুস্থলে পৌঁছে মৃত হাতিটি পর্যবেক্ষণ করেন। সোমবার সকালে পশু চিকিৎসক ডেকে মৃত হাতির মরণোত্তর পরীক্ষার পর অন্তিম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এতে স্থানীয় জনগনের পাশাপাশি বন বিভাগের কর্মীদের উপস্থিতিতে সনাতনী রীতি নীতি সহ পূজার্চনার পর এক্সকেবেটর লাগিয়ে গর্ত করে মৃত হাতি মাটিপোঁতে রাখা হয়।

উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে এই বুনো হাতিটির শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সক্ৰিয় হয়ে সাময়িক ভাবে হাতিটির চিকিৎসা সহ দেখ ভালের ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা যথেষ্ট ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে। সেসময়ে এলাকার পশুপ্রেমী জনগন ওয়াইল্ড লাইফ সংস্থাকে অকুস্থলে পৌছে রোগা হাতিটির চিকিৎসার জন্য আর্জি জানালেও নিটফল শূণ্য।

জানা গেছে, বৃহত্তর পাথারকান্দি এলাকার বনাঞ্চলে ৩০ বা ৪০ বছর আগে মোট ১৩টি বুনো হাতি ছিল।এদের বিচরণ স্থানীয় বনাঞ্চল সহ পাশ্ববর্তী বাংলাদেশে ছিল। তাদের মধ্যে সব কয়টি মহিলা হাতি ছিল।পর্যায়ক্রমে অসুস্থতা সহ তড়িতাঘাত সহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিভিন্ন সময়ে দশটি হাতির মৃত্যু ঘটে।বর্তমানে তিনটি হাতি সাকুল্যে জীবিত থাকলেও রবিবার আরেকটি হাতির মৃত্যু হওয়াতে বর্তমানে দুটি বুনো হাতি বেঁচে আছে। যদিও ওই বুনো হাতির দলের আস্তানা জঙ্গল মহলে ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে বেরিয়ে আসতো। এতে হাতির রোষানলে পড়ে বিগত সময়ে অনেকের জীবনদীপ নিভে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই গুরুতর আঘাতপ্ৰাপ্ত সহ বাগান বস্তি এলাকার বহু বসত বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় এই হাতির দল। সেই সঙ্গে কৃষকের ক্ষেত খামারেও অবাধে ধ্বংসলীলা চালিয়ে যেত।তথাপি সাধারণ জনগণ কখনও এদের ক্ষতি সাধনের ভাবনাচিন্তা করেননি। এই হাতির মৃত্যু জনিত সংবাদে স্থানীয় অনেকেই দুঃখ প্ৰকাশ করেছেন।