ডিমাহাসাওয়ে বরাকের দুই যবুক অপহরণের ৭দিন হয়ে গেলেও উদ্ধারে ব্যর্থ পুলিশ
এবি লস্কর, লালা।
বরাক তরঙ্গ, ১ আগস্ট : বরাকের দুই যুবক অপহরণ ডিমা হাসাও জেলায়। নির্মাণ সংস্থার কাজে নিয়োজিত দুই যুবককে বন্দুকের নলের মুখে তুলে নিয়ে যায় ১০/১২ জনের সশস্ত্রবাহিনীরা।গত শুক্রবার রাত ১০ টা নাগাদ এ ঘটনা সংঘটিত হলে সপ্তাহদিন পূর্ণ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দুই যুবকের কোন সন্ধান খুঁজে পায়নি ডিমা হাসাও পুলিশ। প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, দুই যুবককে ছাড়িয়ে নিতে মোটা অংকের অর্থ দাবি করা হয়েছে অপহরণকারীদের তরফ থেকে। এই ঘটনার পর থেকে উৎকন্ঠার মধ্য দিন অতিবাহিত করছেন অপহৃত দুই যুবকের পরিবার। দুই যুবককে অপহরণকারীদের খপ্পর থেকে অক্ষত উদ্ধার করতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে অপহৃত যুবক ইকবালের পরিবারের তরফ থেকে।
মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি ! খোঁজ নিলেন বিধায়ক নিজাম, অক্ষত উদ্ধারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা অপহৃতের পরিবারের
জানা গেছে, হায়দরাবাদের আনুষা প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অধীনে হাইলাকান্দি জেলার সাহাবাদ প্রথম খণ্ডের ইকবাল হুসেন লস্কর (২৯) এবং করিমগঞ্জ জেলার আছিমগঞ্জের কাদির হুসেন (২৮) (প্রাপ্ত তথ্যমতে) সড়ক নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। গত শুক্রবার অর্থাৎ ২৬ জুলাই রাতে ডিমা হাসাও জেলার মাহুর থানার অন্তর্গত নিয়ানগ্লো পুংগ-য়ের রেহির এলাকায় অবস্থিত নির্মাণ সংস্থার ক্যাম্পে রাত দশটা নাগাদ অতর্কিত হামলা চালায় সশস্ত্রধারী ১০/১২ জনের একদল যুবক। তাদের সবার মুখে কালো কাপড় এবং হাতে হাতে ছিল বন্ধুক। তারা ক্যাম্পে ডুকে জানতে চায় এখানকার প্রধান কে? বন্ধুকের ভয়ে শ্রমিকরা তাদের শ্রমিক প্রধানকে দেখিয়ে দিলে সেখানে থাকা সব শ্রমিককে ক্যাম্প থেকে তাড়িয়ে দিয়ে দুই যুবককে বন্দুকের নলের মুখে তুলে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, দিনের বেলা নাকি এই অপহরণকারীদের কজন যুবক কাজের সাইটে এসে তাদের উপর নজরদারিও করে সাধারণ পোষাকে। আর রাতেই অপহরণের ঘটনা সংগঠিত করে। পরদিন সকালে ব্যাপারটা জানাজানি হলে, ঘটনার সূত্র ধরে ডিমা হাসাও পুলিশ অভিযানে নামে কিন্তু সপ্তাহদিন হয়ে গেলেও পুলিশ দুই যুবকের কোন সন্ধান খুঁজে পায়নি। জানা গেছে, অনুষা প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামের নির্মাণ সংস্থা মাহুর থেকে তামেলং পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজে নিযুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে, ঘটনার দুই দিন পর ইকবালের বাড়িতে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ৪০/৫০ সেকেন্ডের একটি ফোন কল আসে। ইকবালের মা সেই ফোন রিসিভ করলেও কোন কিছু বুঝার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া হয়। এরপর থেকে আর কোন হদিস পাননি। তবে অপহরণকারীরা মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে আনুষা প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্তাধিকারী শ্রমিক উদ্ধারে কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা কেউ কিছু বলতে পারছেন না। ঘটনার খবর পাওয়ার থেকেই ইকবালের পরিবারের লোকেরা ডিমা হাসাও জেলায় অবস্থান করছেন তবে এখনও পর্যন্ত উদ্ধারের কোন খবর নেই।
এদিকে, বুধবার রাতে সাহাবাদে ইকবাল হোসেনের বাড়িতে উপস্থিত হন আলগাপুরের বিধায়ক হাজি নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, রাইজর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন লস্কর, হাইলাকান্দি প্রেস ক্লাবের সভাপতি নইমুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। তারা অপহৃত ইকবালের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এ ঘটনার খোঁজ খবর নেন। আলাগাপুরের বিধায়ক এ ব্যাপারে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সাংবাদিক নইমুল ইসলাম চৌধুরী এবং জহির উদ্দিন লস্কর দুই যুবকের অক্ষত উদ্ধার কামনা করেন।