অধ্যাপক কমরুল হককে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ, সিবিআই তদন্তের দাবি
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২৪ অক্টোবর : বরাক উপত্যকার অন্যতম শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং পাথারকান্দি কলেজ ও বিএড কলেজসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অধ্যাপক কমরুল হক-এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হল পাথারকান্দি কলেজ প্রাঙ্গণে। প্রতি বছর ১৯ অক্টোবর এই স্মরণদিবস পালন করা হলেও এবছর দুর্গাপূজার কারণে ২৪ অক্টোবর তা পালন করা হয়। দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্মৃতিচারণায় মুখর ছিল পাথারকান্দি কলেজ ও আশেপাশের এলাকা।

শুক্রবার সকালে ঠিক নয়টা নাগাদ কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয় এক শোক মিছিল। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অশিক্ষক কর্মচারী, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন।সকলেই বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে নীরব শোকপ্রকাশ করেন। র্যালিটি আছিমগঞ্জের পূর্বগুলে গিয়ে প্রয়াত অধ্যাপকের সমাধিস্থলে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন উপস্থিত সকলে।স্যার ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক। আজ আমরা তাঁর স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গীকার করছি। এক প্রাক্তন ছাত্রের আবেগঘন বক্তব্য।

র্যালিটর পর সবাই পাথারকান্দি সার্কল অফিসে যান। সেখানে প্রয়াত কমরুল হকের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক স্মারকপত্র প্রেরণ করা হয়।এই পদক্ষেপে এলাকার মানুষ আশা প্রকাশ করেন যে বহুদিনের দাবি এবার গুরুত্ব পাবে।

দুপুর সাড়ে বারোটায় কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত হয় এক আবেগঘন স্মৃতিচারণ সভা, সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মঞ্জুরুল হক। সভার শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় সর্বধর্ম প্রার্থনা, যেখানে উপস্থিত সকলে প্রয়াত আত্মার শান্তি কামনা করেন।

বক্তৃতা রাখেন পাথারকান্দি কলেজেত অধ্যক্ষ তথা প্রয়াত কমরুল হকের কনিষ্ঠ ভাই ড. মঞ্জুরুল সহ বদরপুর এনসি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মর্তুজা হোসেন, অধ্যাপক নিগম্বা সিনহা, ড. অমরেন্দ্র নাথ, অধ্যাপক গৌতম দাস, শিক্ষাবিদ আহমদ হোসেন, কলেজ জিবি সভাপতি কর্নেল বিজয় সিনহা (অব.), এইচ. এম. আমির হোসেন প্রমুখ।কমরুল হক ছিলেন শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি ছিলেন শিক্ষার এক স্থপতি, সমাজ সংস্কারক এবং সত্যিকারের মানবতাবাদী। ড. মর্তুজা হোসেন, প্রাক্তন অধ্যক্ষ, এনসি কলেজ
বক্তারা বলেন, কমরুল হক স্যারের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দূরদর্শিতার ফলেই আজ পাথারকান্দিতে শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো আজও তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত।
সারাদিন ধরে কলেজ প্রাঙ্গণ জুড়ে ছিল এক গভীর আবেগঘন পরিবেশ। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার মিশেলে ছাত্র-শিক্ষকসহ এলাকার মানুষ স্মরণ করেন তাঁদের প্রিয় শিক্ষককে।দিনের শেষ প্রহরে কলেজ প্রাঙ্গণে মোমবাতি জ্বেলে নীরবতা পালন করে সবাই জানিয়ে দেন কমরুল হক স্যার আমাদের হৃদয়ে চিরজীবী

