সদর থানায় লকআপে যুবকের মৃত্যু, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, পরিবারের পক্ষে মামলা
বরাক তরঙ্গ, ১৩ অক্টোবর : যোরহাট সদর থানায় ঘটে গেছে এক চাঞ্চল্যকর ও দুঃখজনক ঘটনা। থানার লকআপের ভেতরেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে প্রীতম দত্ত নামে এক যুবকের দেহ। জানা গেছে, শনিবার রাত প্রায় ১১:৩০ নাগাদ ভোগদৈ পুলিশ আউটপোস্টের একটি দল চুরির অভিযোগে যোরহাট জেলার ২ নম্বর চেঙেলিগাঁও এলাকার ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রীতম লকআপের শৌচাগারে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ঘটনাটির পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় থানার লকআপ। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ফরেনসিক দল। তাদের রিপোর্টের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, লকআপের ভিতরের ঘটনাগুলি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে এবং সেই ফুটেজে আত্মহত্যার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
তবে, পুলিশের এই বক্তব্য নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। কারণ, মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর পর্যন্তও নিহত যুবকের পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। পুলিশের বক্তব্যে অসঙ্গতিও ধরা পড়ছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
জানা গেছে, প্রীতম একজন মাদকাসক্ত ছিলেন এবং অতীতেও তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু তার মৃত্যুকে ঘিরে যেভাবে রহস্য দানা বেঁধেছে, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নিহতের পরিবার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার বর্ণালী গোহাঁইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পরিবারের দাবি, এটা আত্মহত্যা নয়, বরং এই মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য যোরহাট জেলার বাইরে থেকে একজন পুলিশ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।
যুবকের এই মৃত্যুকে ঘিরে গোটা এলাকায় শোক এবং ক্ষোভের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষও।