মুখ্যমন্ত্রীর চাপে হরিয়ানা থেকে মুক্ত বাংলার ৩০ শ্রমিক
২৮ জুলাই : বাংলার বাইরে বাংলা ভাষায় কথা বললেই হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বাঙালিদের। এর বিরুদ্ধে বারবার সুর চড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই হরিয়ানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন বাংলার ৩০ জন পরিযায়ী শ্রমিক। এই শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছিল হরিয়ানা সরকার। পরে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ উপযুক্ত নথি পাঠালে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। শুধু হরিয়ানা নয়, অসম, দিল্লি-সহ একাধিক রাজ্যে বাঙালি হেনস্থার খবর পাওয়া গিয়েছে। ভিনরাজ্যে বাঙালি নির্যাতন নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার এক্স হ্যান্ডল একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘দিল্লি পুলিশ মালদার চাঁচলের এক পরিযায়ী পরিবারের এক শিশু ও মা-কে কী নিষ্ঠুরভাবে মেরেছে! বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিজেপির ভাষা সন্ত্রাসে একটি শিশুরও পরিত্রাণ নেই! দেশকে এরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে’?
এর আগেও হরিয়ানায় ৩০ জন আটক হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে নিন্দা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, গত কয়েক দিন থেকেই সারা দেশে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। ২১ জুলাই দলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাঙালিদের হেনস্থা করলে চুপ করে বসে থাকবে না তৃণমূল।
অন্যদিকে, হরিয়ানায় ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকর সময় তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শ্রমিক। সে কারণেই এখনও তাঁদের মধ্যে কাজ করছে ভয়। এমনকি আধার কার্ড দেখানোর পরেও তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছে পুলিশ। গভীর রাতে বস্তির বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন হরিয়ানাবাসী বাঙালি এক পরিযায়ী শ্রমিক আঞ্জারুল। পাঁচ বছর আগে পেটের দায়ে হরিয়ানায় গিয়েছিলেন। আঞ্জারুলের কথায়, ‘টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যায় পুলিশ। কারণ জানতে চাইলে বলা হয় বাংলাদেশি’। আঞ্জারুলের স্ত্রীও আতঙ্কের কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাকেও মেরেছিল। আধার কার্ড দিয়েছিলাম। বলেছিলাম পরিচয়পত্র দেখে নিন। এত রাতে কেন তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই কথা বলতেই সেই পুলিশ সজোর চড় মারে আমাকে। এখন ডান কানে কম শুনছি।’
হরিয়ানা পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন ওই বাঙালি বস্তির বাসিন্দারা। যদিও ৩০ জন বাঙালি শ্রমিককে হরিয়ানা সরকার মুক্তি দিয়েছে। এই ঘটনাকে মমতা চাপে নতিস্বীকার হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিজক মহল। জানা গিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার পর গুরুগ্রাম থেকে মালদহের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
খবর : দৈনিক স্টেটসম্যান বাংলা।