দাসকলোনিতে ২৭তম ভগবান শ্রীরাম চন্দ্রের পূজার সূচনা
দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৬ ডিসেম্বর : শিলচর পঞ্চায়েত রোড সর্বজনীন শ্রীরাম পূজা কমিটির উদ্যোগে দাসকলোনিতে ২৭তম ভগবান শ্রীরাম চন্দ্রের পূজার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেন শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ধর্ম আচার্য প্রমূখ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, প্রধান অতিথি আরএসএসের বরিষ্ঠ প্রচারক শশীকান্ত চৌথাইওয়ালো, বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক্ষেত্র ধর্ম প্রচার প্রমুখ পূর্ণচন্দ্র মণ্ডল, প্রাক্তন পুর কমিশনার গোপাল রায়, মন্টু সাহা, অধ্যাপক ড. দেবাশিস ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এদিন সন্ধ্যায় শ্রীরাম চন্দ্রের পূজাটিকে কেন্দ্র করে এক সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রথমে উপস্থিত অতিথিদেরকে পঞ্চায়েত রোড সার্বজনীন শ্রীরামপূজা কমিটির পক্ষ থেকে গলায় উত্তরীয় ও হাতে স্মারক তুলে দিয়ে সম্মান জানানো হয়। সভায় বক্তব্যে পূর্ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ভগবান শ্রীরামের আদর্শকে সবাই সনাতনীদেরকে চলতে হবে।আর ভগবান শ্রীরামের আদর্শ ও নীতিতে দেশ চালিত হতে হবে, তবেই ভারতবর্ষ এক সমৃদ্ধশালী ও আদর্শ সম্পূর্ণ দেশ হিসেবে সমগ্ৰ পৃথিবীতে সুখ্যাতি লাভ করবে। শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ বলেন, অনেকেই পূজার অর্থবুঝি না। পুজোর শুধু ফুল বেলপাতা দেওয়া নয়। হাতজোড় করে দুহাতে প্রণাম করা পূজা নয়, চোখের জল ফেলে গড়াগড়ি দেওয়া নয়, ধর্মের জন্য আত্মবলি দান দেওয়াই সর্বশ্রেষ্ঠ পূজা, যেদিন ধর্মের জন্য আত্ম বলিদান করতে পারবেন সেদিনেই প্রকৃতপূজা হবে।বর্তমান সময়ে সাম্প্রতিক বাংলাদেশে যেসব হচ্ছে সে বিষয়েই আমাদের সচেতন হওয়া উচিত, বাংলাদেশের রামের কথা বলার মতো লোক নেই রামের ধ্বনি দিলে তাকে জবাই করে দেয়।সকলেই সেখান থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল সেটা আমরা ভুলে গেছি, আমরা ভুলে গেছি যেখানে যেখানে সেই অশুভ শক্তি বেড়ে উঠেছে সেখানে শুভশক্তির মানুষ বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আফগানিস্তান এক সময় গান্ধার রাজ্য ছিল সেটা এখন জঙ্গি রাজ্য, পাকিস্তানে হিন্দু থাকার মত পরিবেশ নেই আর বাংলাদেশে বর্তমান যে হত্যাযজ্ঞ নিধন চলছে তা দেখেও যদি আমরা নিজেরা সচেতন না হই তাহলে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য খুবই ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াবে। এসব অসুরা যুগে-যুগে ইংরেজ, মুঘল, পাঠানরা এসে সনাতন ধর্মকে বিনাশ করার জন্য অনেক অত্যাচার নির্যাতন লুণ্ঠন ধর্ষন, ধর্মান্তর করুন যুগে যুগে চালিয়েছেন তাদের এই প্রচেষ্টা, তাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল এবং থাকবে, তাই এসব থেকে আমাদের সচেতন হতে হবে আমরা শুধু পূজা করলেই চলবে না।
বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী বলেন, পৃথিবীর সনাতনীদের ঐক্যবদ্ধ করতে হলে ভগবান শ্রীরামের আদর্শকে সামনে আনতে হবে, আজকের দিনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার ও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভগবান শ্রীরামের আদর্শকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, সনাতনীদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আমরা সবাই গর্বের সহিত বলতে পাচ্ছি আমরা সনাতনী। অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রত্যেক হিন্দুদেরকে কাজ করতে, শিক্ষা গ্ৰহনে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে শুক্রবার সকাল ৭ টায় শ্রীরাম পূজা আরম্ভ, দুপুর ১২ টায় মহাযজ্ঞ, দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে ভক্তদের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যা ৫ টায় দীপযজ্ঞ, ৬ টা ৩০ মিনিটে ধর্মসভা সহ আরো সনাতনী অনুষ্ঠান। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত বর্ণালী কর্মকার, বাবলু কিওট, সম্রাট রায়, কিষান রায়, ওম চক্রবর্তী, শ্রেয়াংশু ভট্টাচার্য, পিনাক রায়, জয় দেব নাথ, পঙ্কজ দাস সহ আরো অন্যান্যরা।