‘মুলুক চলো আন্দোলন’র ১০৩তম বর্ষপূর্তি পালন রামকৃষ্ণনগরে
মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।
বরাক তরঙ্গ, ২২ মে : যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে ‘মুলুক চলো আন্দোলন’র ১০৩তম বর্ষপূর্তি পালন করা হল রামকৃষ্ণনগরে। মঙ্গলবার রামকৃষ্ণ নগর সার্কল প্রেসক্লাব ও রামকৃষ্ণ নগর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের যৌথ উদ্যোগে রামকৃষ্ণনগর কলেজে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ষপূর্তি পালন করা হয়। সহযোগিতায় ছিল কলেজের ইতিহাস বিভাগ।
কর্মসূচি শুরুতে বীর শহিদদের প্রতি শ্ৰদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়। এরপর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনায় মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ইতিহাস সংকলন যোজনার সর্বভারতীয় সচিব হেমন্ত ধিং মজুমদার। এছাড়াও আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে মঞ্চে ছিলেন সাংসদ কৃপানাথ মালা, করিমগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত তেওয়ারি, রবীন্দ্র সদনের অধ্যাপক নীলাঞ্জন দে, অসম চা নিগমের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা, বিশিষ্ট লেখক বিবেকানন্দ মহন্ত, রামকৃষ্ণ নগর কলেজের অধ্যক্ষ সুরজিৎ সেন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপিকা লীনা চক্রবর্তী, সম্মিলিত মঞ্চের সভাপতি মৃদঙ্গ দত্ত চৌধুরী, প্রেসক্লাব করিমগঞ্জের সাধারণ সম্পাদ অরূপ রায়, সার্কল প্রেসক্লাবের সম্পাদক রশিদ আহমদ প্রমুখ।
বক্তারা ‘মুলুক চলো’ আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরেন। বলেন, তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনে চা শ্ৰমিকদের নানা কারনে অকারনে অত্যাচার অবিচার করত প্রশাসকরা।এতে শ্রমিকদের মধ্যে পঞ্জীভূত ক্ষোভ এক সময়ে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। ফল স্বরূপ ১৯২১ সালে বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলার রামকৃষ্ণনগর কেন্দ্রের চরগোলা ভ্যালির শ্রমিকরা সম্মিলিত ভাবে “মুলুক চলো আন্দোলন”এর ডাক দেন। তখন হেঁটে বা নৌকা যোগে অনেক শ্রমিকরা ভিন রাজ্য তথা বাড়ি ফেরা শুরু করেন। এতে ব্রিটিশদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সে সময়ে তৎকালিন অবিভক্ত পূর্ববঙ্গের শ্রীহট্ট জেলার মেঘনা নদী দিয়ে নৌকা যোগে বাড়ি ফেরা শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করে বর্বর ইংরেজ সেনারা। যে আন্দোলনটি পরবর্তীতে মুলুক চলো আন্দোলন নামে পরিচিতি লাভ করে।
এদিন রামকৃষ্ণ নগর সার্কল প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনোজ মোহান্তির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিলেন সাংসদ কৃপানাথ মালা ও বিধায়ক বিজয় মালাকার।