পাটোয়ারী নুরুলের বিছানার নিচ থেকে ১০ লক্ষ উদ্ধার

বরাক তরঙ্গ, ১৯ জুলাই : ঘুষ নেওয়ার সময় গ্রেফতার হওয়া পাটোয়ারী নুরুল হকের গোবিন্দপুর দ্বিতীয় খণ্ডের (বাগেহর) বাড়িতে তল্লাশি চালায় দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তারা। সূত্রে জানা যায়, তার বিছানার নিচে পাওয়া গেছে ১০ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার নুরুল গ্রেফতারের পর তার বাড়িতে তল্লাশি হয়।

নুরুলের প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গেছে, শিলচরে নুরুল ধরা পড়ার খবর পাওয়ার পরই তার পরিবারের লোকেরা বাড়ি থেকে অনেক কিছু সরিয়ে নেন। তবে বিছানার নিচে যে ১০ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ছিল তা পরিবারের লোকেরা জানতেন না। তাই এই টাকা থেকে যায় বিছানার নিচেই। তল্লাশি চালিয়ে পেয়ে যায় পুলিশ।

এদিন কার্যালয়ে পৌঁছে ওৎপেতে থাকেন। আক্তার কার্যালয়ে গিয়ে নুরুলের হাতে টাকা তুলে দিতেই তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়।

আশিক আক্তার জানিয়েছেন, কাশিপুর দ্বিতীয় খণ্ডে ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে সড়ক তৈরির জন্য তার দুই খণ্ড জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। দুটি জমিতেই রয়েছে ঘর। এই বাবদ ক্ষতিপুরণ প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট পাটোয়ারি নুরুল হককে ‘ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়ার জন্য বললে তিনি দুটি জমি বাবদ ৩০ হাজার করে ৬০ হাজার এবং জমি দুটিতে থাকা ঘর দুটির জন্য আরও ৩০ হাজার করে দাবি করেন মোট ৬০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে নুরুল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করলে তিনি জানান, তার পক্ষে এত অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়। এই অবস্থায় দরাদরি শেষে নুরুল ঘুষের পরিমাণ কিছুটা কমাতে রাজি হন। নুরুল ঘুষের পরিমাণ কিছুটা কমাতে রাজি হলেও তার মনে হয় এভাবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। তাই তিনি দুর্নীতি দমন শাখার কাছে রিপোর্ট করেন। এরপর দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকদের নির্দেশে এদিন তিনি ৫ হাজার টাকা তুলে দিতে যান। আর তখনই নুরুলকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়।

ভারতমালা প্রকল্পের এই সড়কের জন্য অধিগৃহীত জমির ক্ষতিপূরণের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। যারা নিয়মমাফিক ক্ষতিপূরণের দাবিদার এদের কাছ থেকে যেমন চাপ দিয়ে ঘুষ আদায় করা হচ্ছে, তেমনি অনেকের জমিতে রাতারাতি নামকাওয়াস্তে কোনও পরিকাঠামো গড়ে তোলে একাংশ পাটোয়ারির যোগসাজশে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এভাবে অনেক জমিমালিককে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে একাংশ পাটোয়ারিরও আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উড়ছে। ওই একাংশ পাটোয়ারির কত অর্থ থাকতে পারে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে নুরুলের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা টাকাই।

নুরুল হক সম্পর্কে অভিযোগ, ভারতমালার ক্ষতিপূরণের নামে একাংশ সরকারি কর্মী- আধিকারিক ও দালালদের নিয়ে যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, তিনি এই সিন্ডিকেটের এক বড় মাপের চাঁই। ভারতমালার ক্ষতিপূরণ পর্ব শুরু হওয়ার পর তার আর্থিক উত্থান ঘটেছে জেটগতিতে। তার হয়ে ময়দানে নেমে শিকার ধরে আনে আরকাটিপুরের বাসিন্দা বড়ভূইয়া পদবীরই এক দালাল। ওই দালালকে ধরলে এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা।

Author

Spread the News