এক পলকের জন্যও কী কখনও ভালোবেসেছিল

।। ববিতা বরা ।।
২১ এপ্রিল : কখনও কখনও হৃদয়ের ভেতর আগুন জ্বলে ওঠে। এই আগুনের উৎসও জানা যায় না। আবার আগুনের শুরু কিংবা শেষও জানা যায় না। শুধু বোঝা যায়—
এই আগুনের তাপে যে পুড়ে যায়, সে যেন এক বন ফরিঙের মতো অনন্তকাল কাঁপতে থাকে। আর একদিন, সেই আগুনের তীব্রতায় প্রভাব পড়ে কোথাও—কলিজা থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত।

কাছের কিছু মানুষ, যাঁদের সঙ্গে নিজের প্রতিটা মুহূর্ত ভাগ করেছিলে, হাসির উৎস শেয়ার করেছিলে, তাঁরা একদিন তোমার হাত ছেড়ে, ভিড়ের মাঝখানে তোমার হারিয়ে যাওয়াকে দর্শকের মতো উপভোগ করে।  যাঁদের সামনে তুমি সমস্ত কিছু খুলে বলেছিলে— তাঁরাই একদিন তোমার হাসির কারনগুলো কেড়ে নেয়। তখন অবাক লাগে। আর হৃদয়ের গভীরে প্রভাব ফেলে তার, নিজেকেই জিজ্ঞেস করতে বাধ্য করে—“কেন আমার সঙ্গে এমন হল?”

নিজেকে উন্মুক্ত করে দিলে মানুষ দুইবার ধর্ষণ করে— একবার শরীরের, আরেকবার মনের।
শরীরকে হয়তো ধুয়ে-মুছে নতুন করে সাজানো যায়, কিন্তু মনকে…
মনকে আর কখনও জোড়া লাগানো যায় না, সুখী করা যায় না, বা দূর করা যায় না সেই অস্থিরতা।
এইভাবে মন বসে না কোনও কাজে।এইভাবে কোনও কিছুতে একাগ্র হওয়া যায় না। হৃদয়ের ভেতরে কষ্টগুলো যখন ধাক্কা মারে,
তখন নীরবে চোখের জল গড়িয়ে পড়ে—
মানুষের ভীড়ে…
মানুষের মাঝখানে।
শুধু হু হু কান্নাগুলো কেউ শুনতে পায় না, লজ্জায়, ভয়ে বা সম্মানের খাতিরে চেপে রাখা হয়। বালিশের মতো যদি কেউ থাকতো, যে নিঃশব্দে চোখের জলকে আগলে রাখত বুকে,
যে তোমার স্বপ্নগুলোকে বুকের মধ্যে আঁকড়ে রাখতো, তোমার উষ্ণ আবেগে বিনা দ্বিধায় আশ্রয় নিতো—
ভালবাসা আর বিশ্বাসে ভর করে। কথাগুলো কথা হয়েই থেকে যায়।কথাগুলো কথা হয়েই থাকুক। শুধু কৌতূহল বুকে বাজতে থাকে—
“ভালবাসা মানুষগুলো এক পলকের জন্যও কী কখনও ভালোবেসেছিল?”

এক পলকের জন্যও কী কখনও ভালোবেসেছিল

Author

Spread the News