কীটনাশক দ্রব্যের উপর ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ শিবির সম্পন্ন
বরাক তরঙ্গ, ৮ আগস্ট : কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে কীটনাশক দ্রব্যের উপর ব্যবসায়ীদের ১২ দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের সমাপ্ত হল। বুধবার মাছিমপুর অরুণাচল অসম রাজ্য কৃষি বিভাগের অধীনে থাকা কাছাড় জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত হাইলাকান্দি জেলার কীটনাশক দ্রব্যের ৪০ জন ব্যবসায়ীদের ১২ দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে এক আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে প্রমানপত্র বিতরণ করা হয়।
এদিনের কীটনাশক দ্রব্যের প্রশিক্ষণ শিবিরের সমাপ্তি সভায় প্রথমে উপস্থিত মুখ্য অতিথি তথা হাইলাকান্দি জেলার কৃষি আধিকারিক ড. আব্দুল বাতিন চৌধুরী, কাছাড় জেলার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী আব্দুর রহমান, কোর্স পরিচালক ড. হিমাংশু মিশ্র, কোর্স কর্ডিনেটর বামন টিমং, উদ্যান শস্য বিভাগের বৈজ্ঞানিক মনোরঞ্জন রায়, ভূমি বিজ্ঞানী অনন্দিতা দাস, ফার্ম ম্যানেজার সগমসর বসুমাতারী, হারলংবি টিমুং, নং ইতেরাং প্রমুখ উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রথমে সবাইকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষি কাজ সহ কীটনাশক ব্যবসাটিকে কিভাবে আরো উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যায় এই বিষয়ে আলোকপাত করেন, যোরহাট অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ শিক্ষা পরিচালক মনোরঞ্জন নেওগ। স্বাগত বক্তব্যে উদ্যান শস্য বিভাগের বৈজ্ঞানিক মনোরঞ্জন রায় বলেন, কৃষিকেরা সমাজের কাছে দ্বিতীয় ঈশ্বরের সমান, তাঁদের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়ার প্রয়োজন আর কৃষিকাজ একমাত্র আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল, কৃষিকাজ থেমে থাকার মতো কাজ নয়, কৃষিকাজ অব্যাহত থাকবে।
মুখ্য অতিথি তথা হাইলাকান্দি জেলার কৃষি আধিকারিক আব্দুল বাতিন চৌধুরী বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই গোটা পৃথিবী ছিল একটি কৃষিনির্ভর সমাজ। এক সময়ে বিশ্ববাজারে সমাদৃত দ্রব্যসামগ্রী ছিল বস্তুত কৃষিভিত্তিক আসামের অবদান। এমনকি, উৎপাদন ও মানব বসতির দিক থেকে আসাম আজও একটি কৃষিনির্ভর রাজ্য এবং কৃষকদের উৎপাদন করা শাক -সব্জির উন্নতির জন্য সঠিকভাবে কীটনাশক দ্রব্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত কীটনাশক দ্রব্যের শহর ও গ্ৰামের বিভিন্ন জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করে থাকেন এবং কৃষকদের উনারা নিয়মিত কীটনাশক সার ও ঔষধের প্রয়োগের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্বটা হলো রাজ্য কৃষি বিভাগের। এরই অঙ্গ হিসেবে গত ২৬ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট অবধি রাজ্যিক কৃষি বিভাগের অধীনে থাকা জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানীর দ্বারা হাইলাকান্দি জেলার ৪০ জন সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত কীটনাশক দ্রব্যের ব্যবসায়ীদের ১২ দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেই সঙ্গে উপস্থিত কীটনাশক ব্যবস্থায়ীদেরকে কৃষকদের উন্নতির হিতে ব্যবসা করার জন্য পরামর্শ দেন।
কাছাড় জেলার কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী আব্দুর রহমান বলেন, সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ ও অগ্রগতিতে কৃষির অবদান অপরিসীম কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থাতেই পরিবারের ভিত গড়ে উঠে এবং শিল্পকলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা শুরু হয়। এই সমাজেই যাযাবর জীবনের পরিপূর্ণ পরিসমাপ্তি ঘটে এবং মানুষ সংঘবদ্ধ ও স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। আগামী কৃষি কাজকে আন্তরিকতা ও উৎসাহের যদি বেকার যুবক -যুবতীরা গ্ৰহন করে কাজ করেন, তাহলে সমাজ সহ দেশের উন্নতি ঘটবে। এরপর উপস্থিত প্রশিক্ষণার্থীদের একটি কৃষি উৎপাদন বিষয়ক পুস্তক সহ প্রমাণ তুলে দেন কৃষি বিজ্ঞানী সহ আধিকারিকরা। সেই সঙ্গে ৪০ জন হাইলাকান্দি জেলার কীটনাশক ব্যবসায়ীরা তাঁদের এই ১২ দিনের প্রশিক্ষণের বিষয়ে মতামত জানান এবং তাঁদেরকে কৃষি বিভাগ এইভাবে সহযোগিতা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।