পাথারকান্দিতে মাদক পাচারকাণ্ডে ধৃত পুলিশকর্মী সহ তিন
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২৫ মে : রক্ষকই ভক্ষক! পুলিশের পোশাকের আড়ালে গোপনে চলছিল মাদক পাচারের চক্র। তবে শেষ রক্ষা হল না। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাথারকান্দি ও বাজারিছড়া থানার যৌথ অভিযানে ধরা পড়ল এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিন মাদক পাচারকারী। উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ হেরোইন, যার আনুমানিক কালোবাজারি মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে মুণ্ডমালা বাইপাস সড়কে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালায় পাথারকান্দি ও বাজারিছড়া থানার পুলিশ। অভিযানের সময় সন্দেহজনক ভাবে ছুটে আসতে দেখা যায় এএস ১০ ডি ৫৫৪৮ নম্বরের একটি পালসার বাইক। বাইক থামিয়ে তল্লাশি চালাতেই চমকে ওঠেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। বাইকের সিটের নিচে লুকিয়ে রাখা ছিল ২৯টি সাবানের বাক্স, যার ভেতর পাওয়া যায় ৩২৫ গ্রাম সন্দেহভাজন হেরোইন। ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয় দুই যুবক আছিমগঞ্জ এলাকার জয়নুল হোসেন ও চেরাগী এলাকার জহরুল হককে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মাদক নিয়ে ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল তারা। তবে এখানেই শেষ নয়। ধৃতদের জবানবন্দির ভিত্তিতে উঠে আসে আরও বিস্ফোরক তথ্য। গোটা পাচারচক্রের মূল চক্রী একজন কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল — নাম আবুল হুসেন। এরপরই নিলামবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাথারকান্দি থানার পুলিশ।

জানা গেছে, ধৃত আবুল হুসেন শ্রীভূমি পুলিশ রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশের উর্দি পরিহিত একজন কর্মী মাদকচক্রের মাথা — এমন তথ্য সামনে আসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রীতিমতো হতবাক। ইতিমধ্যেই পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যদের খোঁজে অভিযান শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। সচেতন মহল পাথারকান্দি পুলিশের এই সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তবে একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, এক পুলিশ কর্মী কীভাবে এমন চক্রে জড়িয়ে পড়ল? এর পেছনে আরও কেউ আছে কি না, তা জানতে তদন্ত জোরদার করেছে পুলিশ প্রশাসন।