উনিশ স্মরণ ও বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানাতে শিলচরে মহামিছিল বরাকের আওয়াজ-এর
বিশ্বজিৎ আচার্য ও দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৬ মে : শিলচরে এক মহামিছিলের আয়োজন করল সংগঠন বরাকের আওয়াজ। ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের সম্মান এবং দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানাতেই এক মহামিছিল বের করে বরাকের আওয়াজ। শুক্রবার বিকেল ৪টায় রাঙ্গিরখাড়ির নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে মিছিল প্রেমতলা ও শিলংপট্টি অতিক্রম করে গান্ধীবাগে গিয়ে শেষ হয়। ১৯ মে-র আগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ায়, যা বরাক উপত্যকার রক্তঝরা ভাষা আন্দোলনের দিন হিসেবে স্মরণীয়, সেখানে নানা ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের উপস্থিতিতে এক বিরল সংহতির চিত্র ধরা পড়ে।

সাংসদ পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, বরাক উপত্যকার বাঙালিদের কাছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাস হিসেবে পরিচিত। এই সংগ্রাম ছিল মূলত অসম সরকারের চাপিয়ে দেওয়া ভাষা বিলের আগ্রাসনমূলক বিধির বিরুদ্ধে। যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৬১ সালের ১৯ শে মে কাছাড় জেলার শিলচর শহরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১১ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ।আজকের দিনের গুরুত্ব আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব রাজ্যের বসবাসকারী বাঙালিদের নিতে হবে। তবেই হয়তো পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারবে আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষরা কিভাবে আত্মত্যাগ করেছিলেন। সেই ইতিহাস স্মরণ করে আমরা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য সচেষ্ট হব। সেটাই হবে ভাষা-শহিদদের প্রতি প্রকৃত সম্মান জ্ঞাপন। বিজেপির কাছাড় জেলা সভাপতি রূপম সাহা , কাছাড় জেলার শিলচরে ভাষা আন্দোলনে শহিদদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তাঁদের আত্মত্যাগের ফলে বরাক উপত্যকার বাঙালিরা বাংলায় কথা বলার অধিকার পেয়েছেন।লেখা-পড়ার অধিকার পেয়েছেন, বাংলা ভাষা শহিদদের স্মরন করাটা প্রত্যেক বরাকবাসীর কর্তব্য।

বিজেপির কাছাড় জেলার সহ-সভাপতি অভ্রজিৎ চক্রবর্তী (ঝলক) বলেন, এই দিনে শ্রদ্ধা জানাই ভাষা শহিদদের, যাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের মাতৃভাষাকে মর্যাদা দিয়েছে। বাংলা শুধু একটি ভাষা নয়, এটি একটি অনুভূতি, আমাদের ভালোবাসার ভাষা। আমরা সবাই মাতৃভাষার গৌরবকে রক্ষা করি এবং আগামীর প্রজন্মকে আমাদের ভাষার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করি,সেই সঙ্গে বরাকের আওয়াজের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রত্যেক সদস্যদেরকে এই মহতী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানান।

পল্লবিতা শর্মা বলেন, আমাদের দায়িত্ব হল এই শহিদদের স্মৃতি চিরস্থায়ী রাখা এবং মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করতে কাজ করা। আসুন আমরা সবাই মিলে বাংলা ভাষাকে আরো বেশি করে জনপ্রিয় করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই ভাষার প্রতি ভালোবাসা শিখাই। এদিন এই অঞ্চলের ২৫টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্য -সদস্যা সহ স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিখিল পাল, সমাজসেবী সৌমিত্র দত্তরায়, শান্তনু পাল, ডাঃ রাজীব কর, কাছাড় জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গোপাল রায়, সহ-সভাপতি রাজেশ দাস, প্রথমা দত্তরায়, কবি-লেখক শতদল আচার্য, সুরজিৎ সোম সহ বিশিষ্টজনেরা।