দাবি মতো টাকা না দিলে মেয়ের লাশ পৌঁছবে হুমকি জামাতার
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ১১ ফেব্রুয়ারি : দাবি মতো টাকা না দিলে মেয়ের লাশ পৌঁছবে এমন হুমকি জামাতার। শুধু তা নয়, কাপড়ে মোড়া মৃতদেহের ছবি পাঠিয়ে স্ত্রীর পরিবারকে নানা হুমকি দিচ্ছে জামাতা। মেয়ের স্বামী বেঙ্গালুরু থেকে এভাবেই একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছে।
ধলাই থানা এলাকার সপ্তগ্রামের অসহায় মা-বাবা পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোন সহায়তা না পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
ধলাই থানা এলাকার সপ্তগ্রামের বাসিন্দা বাবুল হোসেন ও সায়না বেগমের মেয়ে রাবিয়া বেগম লস্কর, তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্কে জড়িয়ে শ্রীভূমির নিভিয়া ভুতুরগুলের বাসিন্দা মৃত ফখর উদ্দিন বড়ভূইয়ার ছেলে ওসমান আলি বড়ভূইয়া (বাসিত) সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলে ওসমানের আসল চেহারা প্রকাশ পায়। রাবিয়ার পরিবারের অভিযোগ, ওসমান বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছে বিভিন্নভাবে যৌতুক দাবি করতে থাকে। সাধ্যমত জামাইয়ের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করে রাবিয়ার পরিবার। এর মধ্যে একবার দাবি আদায় করতে ব্যর্থ হলে রাবিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে বাসিত। নির্যাতনের মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছালে উপায়ান্তর না দেখে রাবিয়ার মা-বাবা মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বেশ কিছুদিন বাড়িতে থাকার পর রাবিয়া ব্যাংকের উদ্দেশ্যে বেরোলে আবারো পালিয়ে নিয়ে যায় বাসিত। মেয়ে জামাতার সঙ্গে গিয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়ার পর, পরিবার মেয়ের সুখ কামনায় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি তখন। এর মধ্যে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয় রাবিয়ার। আবারও শুরু হয় যৌতুকের দাবিতে ফোন কল। সাধ্যমত দেওয়ার চেষ্টা করেন মা-বাবা।

গত পাঁচ মাস আগে রাবিয়াকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে পাড়ি জমায় বাসিত। গত রবিবার রাবিয়ার পরিবারের মোবাইলে রাবিয়ার রক্তাক্ত একটি ভিডিও পাঠায় বাসিত। ফোন কোলে জানায় রাবিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। মেয়ের সঙ্গে কথা বলানোর অনুরোধ করলে অসম্মতি প্রকাশ করে জামাই। তখন রাবিয়ার মা মেয়েকে পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে, লাশ পাঠাবে বলে জানায় বাসিত। একদিন পর কাফনে মোড়ানো একটি ছবি পাঠায় জামাতা বাসিত। সে উল্লেখ করে এই তোমাদের মেয়ের মৃতদেহ, পোস্টমর্টেম করে নিয়ে এসেছি। মেয়ের মুখ দেখতে হলে কিংবা তো দেহ পেতে হলে দাবি মত ৭০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। টাকা দাবি ও মেয়েকে মেরে ফেলিছি জামাতার এধরনের একাধিক ফোন কলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার।

মেয়ে জীবিত না, জামাতার দাবি মতো মেরে ফেলেছে, যদি মেরে ফেলে তাহলে মৃতদেহ, আর যদি জীবিত আছে, মেয়েকে ফিরে পেতে মা বাবা ছুটে আসেন ধলাই থানায়। তারা একটি লিখিত এফআইআর জমা করেন। পুলিশ থেকে জানানো হয় মেয়ে এবং জামাই যেহেতু বেঙ্গালুরুসে রয়েছেন, ঘটনাটি সেখানে সংঘটিত হয়েছে এখানে তাদের করার কিছুই নেই। তারা সেখানকার একটি নম্বর রাবিয়ার মাকে দেন, সেই নম্বরে কল করলে নম্বরটি ইনভেলিড আসে। উদ্বিগ্ন পরিবার জামাই এর দাবি মত মেয়ে মারা গিয়েছে না জীবিত আছে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। মেয়েকে ফিরে পেতে পুলিশের সহযোগিতা চাইছেন অসহায় মা-বাবা।