৫০ টুকরো করা মৃতদেহের মূল অভিযুক্তর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ওড়িশায়
২৬ সেপ্টেম্বর : নির্মম হত্যার পর কি আত্মঘাতী? মূল অভিযুক্তর দেহ উদ্ধারের পর, তেমনটাই মনে করছে পুলিশ। গত কয়েকদিন তোলপাড় মহালক্ষ্মী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে। যে ঘটনা ফের সকলের মনে দিল্লির শ্রদ্ধা কাণ্ডের ভয়াবহতা ফিরিয়ে এনেছে। মহালক্ষ্মীর মূল অভিযুক্ত প্রাথমিক ভাবে পলাতক থাকার পর, পুলিশ জানতে পারে, সে রয়েছে ওড়িশায়। বেঙ্গালুরু পুলিশের দল ওড়িশা পৌঁছলে অভিযুক্তর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে বলে খবর এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছে।
বেঙ্গালুরুর মহালক্ষ্মী তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল কয়েক টুকরোয়। টুকরো অবস্থায় ভরে রাখা হয়েছিল ফ্রিজে। বেঙ্গালুরুর ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন মহালক্ষ্মী। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর দেহ অন্তত ৫০ টুকরো করে কাটা হয়েছিল। তরুণীর মা জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ের ফ্ল্যাটের মালিকই প্রথম খবর দেয় পরিবারে।
পুলিশ জানিয়েছিল, এই হাড়হিম করা কাণ্ডে সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। প্রথমেই পুলিশ জানায়, ঘটনায় যাকে সন্দেহ করা হচ্ছে, সে একজন বহিরাগত। মূল অভিযুক্ত মুক্তিরঞ্জন রায়কে ধরার জন্য এদিন পুলিশ বাহিনী যায় ওড়িশায়।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ অর্থাৎ দেহ উদ্ধারের ১৯ দিন আগে মহালক্ষ্মীকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মহালক্ষ্মীর ঘরে রাখা একটি ট্রলি ব্যাগও পেয়েছে পুলিশ। বেঙ্গালুরু পুলিশ সূত্রে জানা খবর, সম্ভবত খুনিরা শরীরের টুকরোগুলো কেটে সেই ট্রলিতে করে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু এলাকাটি জনাকীর্ণ হওয়ায় তা পারেনি।
হেমন্তের অভিযোগের পর পুলিশ আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। আশরাফ সেদিন বেঙ্গালুরুতে ছিল এবং কর্মস্থলে ছিল। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এবং তাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার বক্তব্য, গত ২০ দিনে তার অবস্থান, কল ডিটেইল রেকর্ড এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের পর আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মহালক্ষ্মী খুনের সঙ্গে আশরাফের কোনও যোগসূত্র নেই। বরং প্রকৃত খুনি বর্তমানে বাংলায়।
মহালক্ষ্মী তাঁর পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করেছিলেন ১৯ অগাস্ট। মহালক্ষ্মীর পরিবার নেপালের হলেও গত ৩৫ বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছে। একই শহরে বসবাস করেও মহালক্ষ্মী তার মা, বোন বা ভাইয়ের সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠ ছিল না। ৯ মাস আগে স্বামী হেমন্ত দাসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর, মহালক্ষ্মী একটি ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতে শুরু করে।
২ সেপ্টেম্বর মহালক্ষ্মীকে খুন করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। সেদিন তার মোবাইল বন্ধ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরবর্তী ১৯ দিন অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা কখনও মহালক্ষ্মীর কোনও খবর জানার চেষ্টা করেনি। অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর মহালক্ষ্মীর ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসার অভিযোগ করলে বাড়িওয়ালা মহালক্ষ্মীর মাকে ডেকে পাঠায়। এরপরই মহালক্ষ্মীর দেহ উদ্ধার হয়।