ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি, ৩৩০টি ত্রাণ শিবির, মৃত্যু দশ জনের
বরাক তরঙ্গ, ২২ আগস্ট : ৭২ ঘন্টা ধরে ভারী ও অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে ত্রিপুরার বিভিন্ন নদীর জলস্তর ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এতে রাজ্যের অনেক জায়গায় বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ১৮২ মিমি, খোয়াই জেলায় ১৫৭.৬০ মিমি ও গোমতী জেলায় ১৫৩. ১০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিশেষ করে গোমতী ও ঊনকোটি জেলা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর মানিক সাহা রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করে রাজ্যে দ্রুত অতিরিক্ত এনডিআরএফ বাহিনী পাঠাতে অনুরোধ করেছেন। এনডিআরএফ’র একটি দল ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে এসে পৌঁছে এবং আরও ৪টি এনডিআরএফ বাহিনী বিমানে করে আনা হচ্ছে। এই ৪টি বাহিনী রাতের মধ্যে রাজ্যে এসে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রাণ, পুনর্বাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর থেকে আজ সন্ধ্যায় এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানানো হয়েছে।
প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে, রাজ্যের ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা এবং ঊনকোটি জেলার নদীগুলির জলস্তর বিপদসীমার উপরে উঠেছে। এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চস্তরে নজরদারি রাখা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর পরস্পরের মধ্যে নিবিড় সমন্বয় রেখে নাগরিকদের এই বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৩০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই শিবিরগুলিতে ৩২ হাজার ৭৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনগুলি থেকে ত্রাণ শিবিরগুলিতে প্রয়োজনীয় খাবার, পানীয়জল, চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তাছাড়াও গ্রাম উন্নয়ন, জলসম্পদ, বিদ্যুৎ, পূর্ত (রোড এন্ড বিল্ডিং), বন, আরক্ষা, অগ্নি নির্বাপন ও জরুরী পরিষেবা এবং আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানগণ গত তিনদিন ধরে নিরলসভাবে উদ্ধার ও ত্রাণকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ভারী ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা রাজ্যে ১,৯০০টিরও বেশী স্থানে ভূমিধস ঘটেছে। এতে বিভিন্ন সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এই সড়কগুলি নিয়মিতভাবে পরিস্কার করা হচ্ছে। প্রাথমিক রিপোর্টে বাড়ি, গবাদি পশু, পরিকাঠামো ও কৃষিজাত ফসলের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ক্ষয়ক্ষতির নিরূপনের কাজ শুরু হয়েছে এবং তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
প্রেস রিলিজে আরও জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ জন ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এসডিআরএফ’র ২৫০টিরও বেশী ক্যুইক রেসপন্স টিম, এনডিআরএফ, সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক, আপদা মিত্র স্বেচ্ছাসেবক সহ অগ্নি ও জরুরী পরিষেবা, বন, বিদ্যুৎ, পূর্ত, কৃষি ও অন্যান্য দপ্তরের কর্মীগণ ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যে নিযুক্ত রয়েছেন।