যুব সমাজকে বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান সুব্রত চৌধুরীর

বরাক তরঙ্গ, ১৩ জানুয়ারি : নানা কার্যসূচির মধ্য দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উদযাপন করলো শ্রীভূমির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন “খুশি স্মৃতি সংস্থা”। এদিন স্বামীজির প্রতিকৃতিতে ফুল মালা দিয়ে শ্রদ্ধা ও প্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুব্রত চৌধুরী। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে দু’জনকে সম্মান জানানো হয়। রাজ্যে ভিত্তিক যোগা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করায় শ্রীভূমি শহরের সাংবাদিক সৌরভ চক্রবর্তী ও সিবিএসই পরীক্ষা মাধ্যমিক ভালো ফলাফলের জন্য দেবার্জুন পালকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তাদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুব্রত চৌধুরী ও দুলাল দেব। তাদের হাতে স্বামী বিবেকানন্দের ছবি, কলম ও উপহার তুলে দেন মৌসুমী দেশমুখ, অরূপ রায় সহ অন্যান্যরা।

এদিন স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবস ও তার আদর্শ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষাবিদ সুব্রত চৌধুরী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ আমাদের আদর্শ তাঁর প্রতিটি বাণী আমাদের চলার পথে শক্তি যোগায়। তিনি যুব সমাজকে উদ্যেশে বলেছিলেন “ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমোনা”। ১৮৯৩ সালের এই দিনে আমেরিকার শিকাগো-তে বিশ্বধর্ম সম্মেলনে ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধিরূপে যুগান্তকারী বক্তৃতা করেন। তাঁর বক্তব্যে ভারতবর্ষের গৌরবময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের বার্তা ধ্বনিত হয়। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারতের মুক্তির যাত্রার সূচনা হয় ১১ সেপ্টেম্বর ১৮৮৩ সালে। ভারতের অগ্নিপুরুষ বীর স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো শহরে বিশ্বধর্ম সম্মেলনে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তা গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আর সেই সূত্র ধরেই একদিকে যেমন স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেরণা জুগিয়েছে অন্যদিকে হিন্দু ধর্মের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই বলছি বিবেকানন্দকে বাদ দিয়ে ভারতবর্ষের উন্নয়ন হতে পারে না ভারতবর্ষের সর্বক্ষেত্রে বিবেকানন্দ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যার আদর্শ চিন্তা ধারা সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান। খুশি স্মৃতি সংস্থা আয়োজিত যুবা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন” খুশি স্মৃতি সংস্থার উপদেস্টা তথা শ্রীভূমি শহরের বিপিন চন্দ্র পাল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুব্রত চৌধুরী।

প্রেস ক্লাবের সম্পাদক তথা খুশি স্মৃতি সংস্থার আহ্বায়ক অরুপ রায় বলেন ভারতবর্ষকে বিশ্বের দরবারে এগিয়ে নিতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৮৫৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন ভারতবর্ষের একমাত্র আরোদ্যা দেবী ভারতমাতা, তাই সব কিছু ছেড়ে শুধু ভারত মাতার আরাধনা করলেই দেশের মানুষের মধ্যে একতার সূচনা হবে। তিনি বলেন, খ্রিস্টানরা চেয়েছিল বিশ্বের দরবারে শুধু তাদেরই ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করা কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকার শিকাগো শহরে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তা শুধু ভারতবর্ষের বা হিন্দুদের মনে জাগ্রত হয়নি আমেরিকায়ও তার প্রভাব পড়েছিল সেই থেকে আজ অব্দি অনেক অন্য ধর্মের মানুষ সনাতন ধর্মের উপর আকৃষ্ট হয়ে এদেশে চলে আসেন এবং মানব সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেন যান। যার জলযন্ত্র প্রমাণ ভগিনী নিবেদিতা যিনি নিজেকে ভারতীয় বলে বারবার তুলে ধরেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন একমাত্র সনাতন ধর্মেই বিশ্ব ভাতৃত্বের জয়দান যেতে পারে। যারা সাম্যবাদ নিয়ে এগিয়ে যেতেছিল তারা যদি সঠিক পথে থাকতো তাহলে বাম চিন্তাধারার দেশগুলো আর গরিব থাকতো না।

যুব সমাজকে বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান সুব্রত চৌধুরীর

সমাজকর্মী দুলাল দেব বলেন, একমাত্র স্বামী বিবেকানন্দই গোটা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন ভারতবর্ষের কথা যার চিন্তাধারায় আজকের ভারত বর্ষ বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমান বিশ্ব ভারতবর্ষকে বাদ দিয়ে চলতে পারবেন। তিনি বলেন, বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বলেছিলেন ভারত কে জানতে হলে আগে স্বামী বিবেকানন্দকে জানতে হবে। বিশিষ্ট আবৃত্তিকার মৌসুমী দেশমুখ বলেন একমাত্র বিবেকান্দের চিন্তা ধারা যুব সমাজ গ্রহণ করলে নিজের সঙ্গে বিশ্বের দরবারে দেশ কে প্রতিষ্টিত করতে পারবেন। তাই দেশ তথা বিশ্বের দরবারে ভারতকে শ্রেষ্ট আসনে বসাতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Author

Spread the News