চারবার বিয়ের কথা পাকা হলেও পিঁড়িতে আর বসা হয়নি রতন টাটার
১০ অক্টোবর : ৮৬ বছর বয়সে প্রয়াত ভারতের অন্যতম শিল্পপতি রতন নেভাল টাটা। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন রতন টাটা। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সবসময় কাজ করে গিয়েছেন রতন টাটা। সে কারণেই জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক স্তরেও বারবার সম্মানিত হয়েছেন তিনি। জন্মের পর নিজের দিদা নাভাজবাই টাটার কাছেই মানুষ হয়েছেন রতন টাটা।
সম্মানিত হয়েছেন পদ্মবিভূষণ (২০০৮) এবং পদ্মভূষণ (২০০০) পুরস্কারে। তাঁর প্রপিতামহ ছিলেন টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা। নিজের জীবনে একাধিক রহস্য ছিল রতন টাটার। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। এক সাক্ষাৎকারে টাটা জানিয়েছিলেন, মোট চারবার তাঁর বিয়ের কথা পাকা হয়েছিল। কিন্তু সেটা আর পৌঁছয়নি পিঁড়ি পর্যন্ত। লস অ্যাঞ্জেলেসে একবার প্রেমে পড়েছিলেন। তিনি ১৯৬২ সালে ইন্দো চায়না যুদ্ধ চলার কারণে মেয়েটির পরিবার তাঁকে ভারতে পাঠাতে চায়নি।
একাধিক নাম করা স্কুলে পড়াশোনা করেছেন রতন টাটা। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মুম্বইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুল, তার পর ক্যাথিড্রাল, জন ক্যানন স্কুল, সিমলার বিশপ কটন স্কুলেও পড়াশোনা করেছেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান। পরে নিউ ইয়র্ক সিটির রিভারডেল কান্ট্রি স্কুল থেকে ডিপ্লোমা অর্জন করেন তিনি। ১৯৬১ সালে টাটা গ্রুপে যোগ দেন। টাটা স্টিলের অপারেশন ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে রতন টাটার হাত ধরে সামনে এসে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস।
এই কোম্পানির মাধ্যমেই টাটা গ্রুপের নাম বিশ্বজুড়ে নয়া স্বীকৃতি পায়। বরাবর মধ্যবিত্তদের জন্য ভেবে এসেছেন রতন টাটা। ২০০৯ সালে অত্যন্ত সস্তায় বাজারে এনেছিলেন টাটা ন্যানো। অন্যান্য যে কোনও চার চাকার তুলনায় দাম ছিল অত্যন্ত কম। ১ লক্ষ টাকায় বাজারে ন্যানো এনেছিলেন তিনি। শিক্ষা ও মানবকল্যাণে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ মিলিয়ন ডলারে টাটা স্কলারশিপ ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন যাতে ভারতীয় পড়ুয়ারা সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে পারে।
পরে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে ৫০ মিলিয়ন ডলার অবদান করেন, যেখানে পরে তাঁর নামাঙ্কিত টাটা হল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে আইআইটি বম্বেতে ৯৫ কোটি টাকা দিয়ে রতন টাটা চালু করেন টাটা সেন্টার ফর টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইন। টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা মুম্বইতে বম্বে হাউজ চালু করেছিলেন যার কাজ ছিল রাস্তার বিপথগামী কুকুরদের সেখানে নিয়ে এসে তাদের যত্ন নেওয়া, খাওয়া দাওয়া করানো।
এমনকি মুম্বইতেও তাজ হোটেলে রাস্তার কুকুররা আসলে রতন টাটার নির্দেশ মেনে তাদের যত্ন নিয়ে থাকেন কর্মীরা। জামশেদজি টাটার পর সেই একই পথে হেঁটেছেন রতন টাটাও। তাঁর আমলে খেলনা, জল, পর্যাপ্ত খাবাদের ব্যবস্থা সব সময় রাখা হয়েছে বম্বে হাউজে।