মিছিলের অনুমতি মিলল না, প্রতিবাদী মার জনতার কাছ থেকে স্মারকপত্র গ্রহণ
কেএইচ লস্কর, লক্ষীপুর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ জুলাই : মিছিলের অনুমতি না দিয়ে সরেজমিনে হাজির হয়ে হাজার হাজার প্রতিবাদী মার জনতার কাছ থেকে স্মারকপত্র গ্রহণ করলেন লক্ষীপুরের মহকুমা শাসক এম জেড থাউসেন। গত ১৭ জুলাই ভোররাতে কচুদরম থানা এলাকার ভুবন পাহাড়ের পাদদেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন মার যুবকের মৃত্যু ঘটে। এই তিন যুবকের মৃত্যুর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এক মিছিলের আয়োজন করেছিল মার সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় ফুলেরতল মারকুলিন থেকে এই প্রতিবাদী মিছিল হওয়ার কথা ছিল। প্রতিবাদী মিছিলের জন্য মার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ লক্ষীপুর মহকুমা শাসকের কাছে আগাম অনুমতি চায়। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিছিলের অনুমতি দেয়নি লক্ষীপুর মহকুমা প্রশাসন।
অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদী মিছিল করতে সোমবার সকালে মার সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পুরুষ মহিলা তাদের বিভিন্ন সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দ মারকুলিন গুডমর্নিং মার্কেটে জমায়েত হন। হাতে প্লেকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে কয়েক পা এগিয়ে ছিল মিছিল। কিন্তু আটকে গেল মিছিল। মিছিল আটকাতে প্রস্তুতও ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ কর্তাদের পক্ষ থেকে মার সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দদের জানিয়ে দেওয়া হয় মিছিল করা যাবে না। মিছিল থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নিতে পারে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশ কর্তাদের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হয় একথা। এতে কিছুটা নরম মনোভাব পোষণ করেন মার সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা পুলিশ কর্তাদের জানান শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল শেষ করে মহকুমা শাসকের কাছে একটি স্মারকপত্র প্রদান করবেন তাঁরা। মিছিলের অনুমতি না দিলে মহকুমা শাসক এখানে এসে স্মারকপত্র গ্রহণ করার দাবি জানান।

এই দাবি শুনে মহুর্তের মধ্যে মারকুলিনে হাজির লক্ষীপুরের মহকুমা শাসক এম জেড থাউসেন। মহকুমা শাসক ও জেলার পুলিশ কর্তাদের রেখেই গুডমর্নিং মার্কেট ও মারকুলিন এলাকায় দাঁড়িয়ে হাতে হাতে প্রতিবাদী প্লেকার্ড তুলে ধরে তিন মার যুবক এনকাউন্টারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান উপস্থিত কয়েক সহস্র মার সম্প্রদায়ের জনগণ। কাছাড় পুলিশের হেফাজতে থাকা তিন যুবকের মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মার উইমেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে মহকুমা শাসকের হাতে এক স্মারকপত্র তুলে দেন। স্মারকপত্রে পুলিশের হেফাজতে তিন মার যুবকের মৃত্যুর নিন্দা, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও মৃতের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে দাবি জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু ঘটে তিন পার্বত্য জনজাতি যুবকের। মৃত লালবিকুং মার (৩৪), লালুংউই মার (২১) এর বাড়ি লক্ষীপুর থানা এলাকার দিলখুশ জিপির প্রত্যন্ত কেবেথেল পুঞ্জিতে।অন্য যুবক জসুয়া মার (৩৫) এর বাড়ি মণিপুর রাজ্যের ফেরজল জেলার তিপাইমুখ। গত ১৬ জুলাই আগ্নেয়াস্ত্র সহ তাদের পাকড়াও করা হয়। ১৭ জুলাই ভোররাতে এনকাউন্টারে তাদের মৃত্যু ঘটে।