করিমগঞ্জে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে নারিকেল চাষ নিয়ে এক দিবসীয় কর্মশালা
পিএনসি, করিমগঞ্জ।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ নভেম্বর : করিমগঞ্জের আকবরপুরস্থিত করিমগঞ্জ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে এবং গুয়াহাটির কোকোনাট ডেভলপমেন্ট বোর্ড, আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহযোগিতায় মঙ্গলবার করিমগঞ্জে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে নারিকেল চাষ নিয়ে এক দিবসীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় করিমগঞ্জ শহরের বিপিনচন্দ্র পাল স্মৃতিভবনের প্রেক্ষাগৃহে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত নারিকেল চাষীদের নিয়ে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনের অনুষ্ঠানে করিমগঞ্জ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের মুখ্য বিজ্ঞানী ও প্রধান ড. পুলকাভ চৌধুরী স্বাগত ভাষণ প্রদান করে নারিকেলের ব্যবহার, গুনাগুন, নারিকেল চাষের এলাকাবৃদ্ধি তথা এর সঙ্গে অন্য ফসলের চাষ, পুকুর পাশে নারিকেল চাষের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মাছ চাষের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধির পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নারিকেল চাষ ও এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হতে বলেন। তিনি নারিকেলের ফসলকে ছোট প্রাণীদের বাহ্যিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে আসাম সরকারের নির্দেশে রাজ্যের কৃষি বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে পদ্ধতি খুঁজে বের করার প্রয়াস চলছে এবং এর মাধ্যমে শীঘ্রই সুফল পাওয়া যাবে বলে জানান।
কর্মশালায় করিমগঞ্জের জেলা কৃষি আধিকারিক স্বরুপ আনন্দ দত্ত, হাইলাকান্দি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মুখ্য বিজ্ঞানী ও প্রধান ড. যোগেশারাধ্যা, কাছাড় কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান ড. হিমাংশু মিশ্র ও করিমগঞ্জের জেলা মীন উন্নয়ন আধিকারিক জিয়াউর রহমান প্রমূখ অংশ গ্রহণ করেন। এতে প্রতিজন বক্তা নারিকেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা, নারিকেলের প্রতিটি অংশের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নারিকেল চাষ করে কৃষকরা কিভাবে ভালো আয় করতে পারেন সে সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। এতে জানানো হয় যে নারিকেল জল এখন বোতল জাত করেও বিক্রি করা হচ্ছে। এই নারিকেল জল নিয়মিত পান করার মাধ্যমে অনেক ধরনের অসুখ থেকে শরীরকে সুস্থ রাখা যায়, তাই এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং এর উৎপাদন এক লাভজনক ব্যবসা।
এদিনের কর্মশালায় জেলা মীন আধিকারিক জলাশয়ের পাশে নারিকেল চাষের পাশাপাশি জলাশয়ে মৎস্য চাষ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহী করেন। তিনি এতে মৎস্য চাষীদের ন্যাশনাল ফিসারী ডিজিটাল প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে এবং সার্টিফিকেট নিয়ে সরকারের ফিশ ফার্মিং প্রকল্পগুলিতে যাদের নিজস্ব জমিতে ফিসারী রয়েছে তাদেরকে আবেদন করতে আহ্বান জানান। এতে তিনি এই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধাগ্রহণ ও বীমার ব্যবস্থা থাকছে বলেও জানান। এদিনের কর্মশালায় প্রাকটিক্যাল সেশনে হাইলাকান্দি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান ড. যোগেশারাধ্যা ও করিমগঞ্জ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. পূরবী তামুলি ফুকন অংশগ্রহণকারী কৃষকদের বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিগতভাবে অধিক ফলনশীল নারিকেল চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বিবরণ তুলে ধরেন।