বিহু, ঝুমুরের ন্যায় ধামাইল নৃত্য আয়োজনে উদ্যোগ নেওয়া হোক : উপাচার্য পন্থ
সম্মিলিত লোকমঞ্চের তরফে সংবর্ধিত রাজীবমোহন পন্থ
বরাক তরঙ্গ, ১৬ ফেব্রুয়ারি : বিহু, ঝুমুরের ন্যায় ধামাইল নৃত্যও বৃহৎ আকারে আয়োজন করা হোক। বরাক উপত্যকার সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এধরণের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শনিবার সম্মিলিত লোকমঞ্চ শিলচর এর এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ রাজীব মোহন পন্থ।
এদিন সন্ধ্যায় সম্মিলিত লোকমঞ্চের সভাপতি অনুপকুমার রায়ের নেতৃত্বে সংস্থার এক প্রতিনিধিদল উপাচার্য রাজীব মোহন পন্থের সরকারি আবাসে গিয়ে উনার সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর বরাক উপত্যকা ভিত্তিক দুদিবসীয় সমবেত ধামাইল নৃত্য ও ধামাইল কন্যা প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল উপাচার্য রাজীবমোহন পন্থের কিন্তু ব্যক্তিগত কাজে শিলচরের বাইরে থাকায় সেদিনের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি ফলে সংস্থার সদস্যরা এদিন তার হাতে স্মারক সম্মাননা, উত্তরীয় খানি তুলে দেন। উপাচার্য পন্থ বলেন ধামাইলকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে সম্মিলিত লোকমঞ্চ শিলচর যে আন্দোলন শুরু করেছে তা সফল ও বাস্তবায়িত হোক এটা মন থেকে চাই এবং তারজন্য অনেক অনেক কামনা জানাই। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান ধামাইল তার প্রিয় নৃত্য। বিগত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে শনবিলে যে অনুষ্ঠান করা হয়েছিল সেখানেও ধামাইল নৃত্য পরিবেশিত হয় । তিনি বলেন ধামাইল এখানকার সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে। যে কোন শুভ অনুষ্ঠানে ধামাইল নৃত্য পরিবেশিত হয় সেটা বিবাহ হোক কিংবা অন্য কোন অনুষ্ঠান, কারণ ধামাইল অত্যন্ত মনমোহক নৃত্য।

উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন অনুষ্ঠানে আমরা ধামাইল নৃত্য আয়োজন করে থাকি। তিনি আরও বলেন এবার বর্ষার মরশুমে চাতলা অঞ্চলে ‘চাতলা উৎসব’ অনুষ্ঠান করার চিন্তাচর্চা রয়েছে তাদের যেখানে অতি অবশ্যই ধামাইল নৃত্যের জমজমাট আসর থাকবে । তিনি সম্মিলিত লোকমঞ্চের সকল সদস্যকে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অগ্রিম আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গত দুবছর সম্মিলিত লোকমঞ্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পেরে আক্ষেপ প্রকাশ করেন এবং বলেন এবার চাতলার এই অনুষ্ঠানে ধামাইলের আসর দেখতে বড়ই উদগ্রীব তিনি, মন্তব্য উপাচার্য পন্থের। বরাক উপত্যকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে জড়িত ধামাইলকে নিয়ে সম্মিলিত লোকমঞ্চের উদ্যোগের ভূয়শী প্রশংসা করে আগামী দিনে সংস্থার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন রাজীব মোহন পন্থ। এদিন সম্মিলিত লোকমঞ্চের সদস্যদের সাথে প্রায় দুই ঘন্টারও অধিক সময় কাটিয়েছেন উপাচার্য পন্থ ও তার সহধর্মিণী ভাবনা পন্থ।

এদিন সম্মিলিত লোকমঞ্চের সভাপতি অনুপকুমার রায় বলেন একজন উপাচার্য এত অমায়িক ও সহজ সরল হতে পারেন তা উনাকে কাছে থেকে না দেখলে বুঝতামই না। আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্পট রয়েছে যার নামাকরণ উপাচার্য নিজে করেছেন সেগুলিও দেখার সুযোগ হয়েছে আমাদের। তিনি বলেন আমরা উপাচার্যের কথায় সবচেয়ে খুশি হলাম এজন্যে যে তিনি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি স্পটের নাম রেখেছেন ‘ধামাইল পয়েন্ট’। বাঙালির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতি এহেন সম্মান প্রদর্শনের জন্য সম্মিলিত লোকমঞ্চের তরফে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই উপাচার্যকে। এদিন সংস্থার মহিলা সদস্যদের হাতে তৈরি পিঠাপুলিরও স্বাদ নিলেন সস্ত্রীক উপাচার্য রাজীবমোহন পন্ত। এদিন উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ এর সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সহ-সভানেত্রী মঙ্গলা নাথ, যুগ্ম সম্পাদিকা অঙ্কিতা ভট্টাচাৰ্য, কোষাধ্যক্ষ ঝিমলি নাথ, প্রচার সম্পাদক কমলেশ দাশ, বরিষ্ঠ সদস্যা স্মৃতি দাস, রাজশ্রী নাথ প্রমুখ। এক প্রেস বার্তায় এ খবর জানিয়েছেন সম্মিলিত লোকমঞ্চের প্রচার সম্পাদক কমলেশ দাশ।
