রাতের উন্মুক্ত শহরে, খুঁজে পায় নিজের আত্মাকে মানুষ
।। ববিতা বরা ।।
২২ মে : রাতের উন্মুক্ত শহরটিতে, মানুষ আবার একবার খুঁজে পায় নিজেকে। খুঁজে পায় নিজের আত্মাকে। হিসেব করে পাওয়া-না-পাওয়ার সেই দিনে তারা কতজন মানুষের আপন হয়েছে, দিনে কতজনকে হারিয়েছে, কিংবা কতবার আঘাত পেয়েছে।
কোন অচেনা পাখির কর্কশ সুরে অবচেতন মনের অভিশাপগুলো জ্বলে ওঠে চোখে, স্পষ্ট হয়ে ওঠে মুখে এবং ফুটে ওঠে কোনও কবির শব্দে—কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে রাতের তৃতীয় প্রহর পর্যন্ত নির্ঘুম কবিতার উৎসগুলো।
দিনের বেলা অবহেলিত, মৃতের মতো শহরের বুকে পড়ে থাকা অবচেতন
স্ট্রিট লাইটগুলোর মতোই যেভাবে জড়তা ভেঙে রাতের শহরটিকে আলোকিত করতে হয়,
রাতের নির্জন শহরের বুকে পা দিলেই অনুভব করা যায়—কোনও প্রিয়জনের বুকে গড়িয়ে গড়িয়ে আপনি অবহেলা, প্রতারণা কিংবা বিসর্জন দিয়েছেন নিজেকে!
রাতের শহরের নীরব কোলাহলে আত্মোপলব্ধি করা যায়—শিউলি হয়ে ওঠার বেদনা, কিংবা শীতলতায় পড়ে থাকা রজনীগন্ধা যে বয়ে বেড়ায় এক রাতের উপন্যাসের চরিত্র হওয়ার বিড়ম্বনা, আর কিভাবে নির্জনতাই ঠিক করে চোখের জলের তাড়না।
কে বলে শুধু চাঁদের শীতলতা?
কে বলে বাউল চুলে জোছনায় স্নান করা শান্ত চাঁদের বুকের পরীর গল্প?
কেন এত চেপে রাখা হলো?
কেন শীতলতাকে ঢেকে রাখা হলো?
কেন শুধু সৌন্দর্য উপভোগ করে দিনের আলোয় খুঁজে দেখা হলো না?
কেন শুধু রাতের আকাশে খুঁজে খুঁজে দেখা হলো নিজের পদচিহ্নের পেছনে পেছনে ছুটে চলা চাঁদটিকে?
নিঃসঙ্গ রাতের স্নিগ্ধ চাঁদটিকে একভাবে দেখলেই বোঝা যায়—শীতলতাও কখনো ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে, কিংবা কাঁপুনির মধ্যে একা স্থির থাকতে বা অন্যের আলোয় উজ্জ্বল হওয়ার অপবাদ সহ্য করতে কতটা দরকার দৃঢ় মন, কিংবা কতটাই বা দরকার একাগ্রতা, নিয়মিত সাহস, যা একাগ্রচিত্তে নিজের কাজ করে যেতে বলে—যদিও বুকের মধ্যে দাগ বয়ে বেড়ায়, অবহেলা, উপেক্ষা বা অপূর্ণতার…