প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও ভাগাবাজারে ঈদের নামাজ, বিশ্ব শান্তি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ দোয়া

রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ৭ জুন : ঈদের দিন সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলেও, বাম অঞ্চলের যে সমস্ত ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে ধর্মপ্রাণ মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেন।
দক্ষিণ ধলাইয়ের কেন্দ্রস্থল ভাগাবাজার বাম ঈদগাহ ময়দান। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় আগে থেকেই মসজিদে নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের আগেই ত্রিতল ভবন মসজিদের সম্পূর্ণ তলা মুসল্লিদের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। দেরিতে আসা মুসল্লিরা মসজিদের উঠানে বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেছেন।
এদিন নামাজ শুরুর আগে ভাগাবাজার জামে মসজিদের ইমাম আফজাল হোসেন লস্কর আজকের দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। তিনি উল্লেখ করেন, আজকের উৎসব মুসলমানদের ত্যাগের উৎসব। তিনি হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর কঠিন পরীক্ষার কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা তার কাছে নিজের সন্তানের কোরবানি চেয়েছিলেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইব্রাহিম (আ.) এতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কৃপায় অবশ্য পরবর্তীতে পুত্রের স্থলে পশু কোরবানি করা হয়। সেই থেকেই ঈদুল আযহায় মুসলমানরা পশু কোরবানি করে আসছেন।

ইমাম কোরআন ও হাদিসের আলোকে আরও উল্লেখ করেন যে, কোরবানি শুধু পশু জবাই করা নয়। নিজের ভেতরের অহংকার এবং কু-মানসিকতাকে কোরবানি বা ত্যাগ করাই প্রকৃত কোরবানি। তিনি বলেন, নিজের ভেতরের পশুকে কোরবানি করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ও হিংসা ভুলে গিয়ে প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাকে প্রকৃত কোরবানি বলে।
এদিন নামাজ শেষে বিশ্বশান্তি কামনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সমগ্র মানবজাতির মঙ্গল ও সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করা হয়। ভাগাবাজার জামে মসজিদের সম্পাদক তথা দক্ষিণ ধলাই মসজিদ সমন্বয় সমিতির সম্পাদক সাবির আহমেদ চৌধুরী প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রশাসনকেও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়। ঈদের একদিন আগে জেলা সদরসহ জেলার সব ক’টি থানা এলাকায় পুলিশ রোড মার্চ করে এবং ঈদের দিনে সারাদিন পুলিশের টহল চোখে পড়ে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
