অবরোধে শিশুসহ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষুধা এবং মৃত্যুর মুখোমুখি গাজায়
২১ মে : গাজার অবরুদ্ধ মানবিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এবার আরও জোরালো আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ভয়াবহ অবরোধে শিশুসহ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষুধা এবং মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থা নিয়ে একের পর এক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। বৃটেন, ফ্রান্স ও কানাডা এবার যৌথভাবে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, নতুবা কূটনৈতিকভাবে আরও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ব্রিটিশ সরকার মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, ইজরায়েলের সঙ্গে নতুন মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা তারা আপাতত স্থগিত রাখবে। এই সিদ্ধান্ত এসেছে গাজায় ইজরায়েলের সামরিক আগ্রাসন, বোমা হামলা ও চরম মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায়। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি পার্লামেন্টে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, গাজায় চলমান শিশু হত্যা ও অবরোধের কারণে মানবতা বিপন্ন, যা মেনে নেওয়া যায় না।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ জানায়, গাজার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, পর্যাপ্ত খাদ্য ও ওষুধ না পৌঁছালে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ১৪ হাজার শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। যদিও পরে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, এই সংখ্যা হলো পরবর্তী এক বছরে মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের একটি প্রক্ষেপণ। তবুও জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার সতর্ক করে বলেন, এই শিশুদের জীবন বাঁচাতে মাত্র দুই দিনের মধ্যেই কার্যকর সহায়তা প্রয়োজন।
ইজরায়েল মঙ্গলবার ৯৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে দিলেও জাতিসংঘ জানায়, সেগুলো গুদামে নেওয়ার অনুমতি মেলেনি। মুখপাত্র স্টিফেন দুজাররিক বলেন, কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও সরবরাহ বিতরণ সম্ভব হয়নি। প্রতিদিন গাজায় অন্তত ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করা প্রয়োজন বলে জাতিসংঘের হিসাব। ইতোমধ্যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৫৭ শিশু ইতোমধ্যেই মারা গেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রপ্রধান কায়া কাল্লাস ঘোষণা দিয়েছেন, ইজরায়েলের কার্যক্রমের ভিত্তিতে তারা ইইউ–ইজরায়েল বাণিজ্য চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। মার্কিন সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির সদস্য মার্কো রুবিওও বলেন, সীমিত সহায়তা অনুমোদন একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, তবে তা পর্যাপ্ত নয়।
খবর : দৈনিক ইনক্লাব পত্রিকা ডিজিটাল।
