শিক্ষাবিদ রাজেশ ভাটিয়ার শিলচর সফর, শিশুর সার্বিক বিকাশে জোর

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১০ মে : মুম্বইস্থিত ট্রি হাউস গ্রুপ অফ এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক রাজেশ ভাটিয়া শনিবার শিলচর সফর করেন।  সফরের অংশ হিসেবে একটি এক্সক্লুসিভ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পার্ক রোডের গান্ধী ভবনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এই সেশনের মূল থিম ছিল শিশুদের সার্বিক বিকাশ—একটি বিষয় যা বর্তমানে অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

শ্রোতাবৃন্দের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন রাজেশ ভাটিয়া। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি শিশুদের সর্বাঙ্গীন বিকাশে বাস্তবমুখী দিকনির্দেশনা ও মূল্যবান অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা, শারীরিক সুস্থতা এবং শিক্ষাগত উৎকর্ষতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।শিশুদের প্রাথমিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুবিধা দিয়ে ট্রি হাউস প্রি-স্কুল বিশেষভাবে পরিচিত। স্কুলটি শিশুদের সর্বোচ্চ যত্নের সঙ্গে দেখভাল করে থাকে, বিশেষ করে ০ থেকে ৮ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করে। প্রারম্ভিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তা বলেন, সুস্থ বিচ্ছিন্নতা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।“সন্তানের সঙ্গে গুণগত সময় কাটানো অত্যন্ত জরুরি। গল্প শোনান, খেলাধুলোর মাধ্যমে শেখান, যাতে শিক্ষা আনন্দদায়ক হয়,”—তিনি বলেন।

ট্রি হাউস প্রি-স্কুলকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে তার এই বিশ্বাস যে, প্রতিটি শিশু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায়। এই ব্যক্তিত্বকে যত্নসহকারে গড়ে তোলাই স্কুলের উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, অভিভাবকদেরও শিশুকে স্কুলের জন্য প্রস্তুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। শিশুর মনে শিক্ষকের প্রতি ভয় ঢুকিয়ে না দিয়ে শেখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা উচিত। শিশুর ভবিষ্যৎ পেশা এই বয়সে নির্ধারণ করাও ঠিক নয়। একটি স্কুল শুধুমাত্র একটি ব্যবসা নয়—এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব। একটি প্রি-স্কুলে শিশু শেখে কীভাবে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতে হয়, বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হয় এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হয়।রাজেশ ভাটিয়া আরও বলেন, শিশুর বিকাশে যোগাযোগই মূল চাবিকাঠি। প্রতিটি শিশুর নিজেকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সুযোগ থাকা উচিত। যোগাযোগের জন্য ইংরেজি ভাষা বাধ্যতামূলক নয়। আসল বিষয় হল, তারা যেন তাদের মাতৃভাষায় বা নিজস্ব ভাষায় সহজে যোগাযোগ করতে পারে।ভাটিয়া এদিন কানেক্টিভিটি, প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি ২০২০) সম্পর্কেও আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল অভিভাবকদের সঙ্গে একটি ইন্টার‌্যাক্টিভ সেশন, যেখানে অভিভাবকরা তাঁদের প্রশ্ন ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভাটিয়া সহানুভূতিশীলভাবে উত্তর দেন এবং বলেন, শৃঙ্খলার সঙ্গে সহানুভূতি ও শিশুদের কৌতূহলকে উৎসাহিত করার মধ্যে ভারসাম্য থাকা জরুরি। ট্রি হাউস প্রি-স্কুল, শিলচরের কর্ণধার বিশ্বজিৎ পাল স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন। প্রি-স্কুলের শিক্ষকরাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষাবিদ রাজেশ ভাটিয়ার শিলচর সফর, শিশুর সার্বিক বিকাশে জোর

Author

Spread the News