বারো দফা দাবিতে নরসিংহপুর উন্নয়ন খণ্ড কার্যালয়ে ধরনা ও বিক্ষোভ সিপিএমের
বরাক তরঙ্গ, ২৫ সেপ্টেম্বর : বারো দফা দাবিতে নরসিংহপুর উন্নয়ন খণ্ড কার্যালয়ে ধরনা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে সিপিআইএমের ধলাই লোকাল কমিটি। বুধবার বিক্ষোভ শেষে বারো দফা দাবি সম্বলিত একখানা স্মারকলিপি কাছাড় জেলার কমিশনারের উদ্দেশে সহকারী বিডিওর মারফতে প্রদান করা হয়। এ দিন বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন দলের অসম রাজ্য কমিটির সদস্য রেজামন্দ আলি বড়ভূইয়া ও ধলাই লোকাল কমিটির সম্পাদক সুশীল বারৈ। রেজামন্দ আলি বলেন, রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার গ্ৰামীণ জনসাধারণের মৌলিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যর্থ এবং এই ব্যর্থতা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টি কোণ থেকে এলোমেলো ভাবে পঞ্চায়েতের ডিলিমিটেশনের খসড়া তৈরি করেছেন,যাতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সরকারের উচ্ছেদ নীতির তীব্র সমালোচনা করেন এবং দাবি আদায়ের জন্য শক্তিশালী গণ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান।
লোকাল কমিটির সম্পাদক সুশীল বারৈ বলেন, জমির তৃতীয় জরিপের কাজ ১৯৯৩ সালে কাছাড় জেলায় শুরু হয়েছিল কিন্তু অদ্যাবধি কাজের কোন অগ্ৰগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। জমির নামজারি করার ক্ষেত্রে জনসাধারণ নানা ভাবে হয়রানি ও দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। গত কয়েকদিনের মারাত্মক খরায় কৃষকের মাঠের ধান নষ্ট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। স্মার্ট মিটারের নামে বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের কাছ থেকে অত্যধিক বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ করে জনগণকে আর্থিক সংকটের মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। গ্ৰামীণ রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। অরুণোদয় প্রকল্পে প্রকৃত লোকেরা বঞ্চিত। এক্ষেত্রে স্বজন পোষন, সংকীর্ণ রাজনীতি করা হচ্ছে। অন্ন সুরক্ষা কার্ডে পরিবারের লোকের সঠিক হিসাব না থাকায় কার্ড প্রাপকরা নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। দুঃস্থ ও গরীব লোক প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে গৃহ নির্মাণের সুযোগ পাচ্ছেন না।
দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে তৃতীয় রি-জরিপে কাজ অতি সত্ত্বর সম্পূর্ণ করে জমির পাট্টা প্রদান করা। সহজ পদ্ধতিতে জমির নামজারী করা ও নামজারী করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করা, স্মার্ট মিটারের নামে বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের কাছ থেকে অত্যধিক বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ বন্ধ করা, ভাগাবাজারের রুকনী নদীর ওপর ভেঙে যাওয়া পুল নির্মাণ করা, বিষ্ণুপুর থেকে আনন্দখাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা, কমরুল ইসলাম, নারাইনপুর থেকে রাজনগর পর্যন্ত রাস্তা ও গ্ৰামীণ রাস্তা গুলো সংস্কার করা। অরুণোদয় প্রকল্পে প্রকৃত হিতাধিকারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা, অন্ন সুরক্ষার কার্ডে পরিবারের সকল সদস্যদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা,অগ্ৰাধিকার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে গরীব, দুঃস্থ লোকের গৃহ নির্মাণ করা,বনাঞ্চলের পতিত, অনুপযোগী ও সরকারি খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসতকার লোকদিগকে জমির বন্দোবস্ত দেয়া, সিংগুয়া, শেওরারতল, আরাধনপুর,খুলিছড়া ইত্যাদি গ্ৰামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ি মেরামতি করার জন্য ক্ষতিগ্ৰস্ত লোকদিগকে সরকারি আর্থিক সাহায্য প্রদান করা, ভাগাবাজার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নার্স নিয়োগ করা ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র সরবরাহ করা,
ভাগাবাজার পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে সার্জন ও কর্মচারী নিয়োগ করা ও পর্যাপ্ত ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা, কৃষি কাজের জন্য জল সেচের প্রকল্প স্থাপন করা, পুটিখাল মধুসূদন সোনারের বাড়ির পয়েন্ট থেকে গৌরাঙ্গ থান এল পি স্কুল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী গ্ৰামীণ সড়ক যোজনার অর্ধ সমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা ও পুল দু’টি নির্মাণ করা।