শিক্ষাবিদ কাজি আতিকুর রহমানকে সংবর্ধনা
মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।
বরাক তরঙ্গ, ২ নভেম্বর : করিমগঞ্জ জেলা সিনিয়র বেসিক ও মধ্যবঙ্গ স্কুল শিক্ষক সংস্থার প্রাক্তন জেলা সভাপতি কাজি আতিকুর রহমানকে সংবর্ধনা প্রদান করেলন বিশিষ্ট কবি ও শিক্ষাবিদরা। শনিবার আছিমগঞ্জের আছিমিয়া এমভি স্কুলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে কবি আসহাব উদ্দিন তালুকদারের পৌরহিত্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হয়।
সংবর্ধনা সভায় বিশিষ্ট কবি তথা বাজারঘাট চরগোলা পাবলিক উচ্চতর বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আনোয়ার হুসাইনের ব্যবস্থাপনায় আজীবন সমাজে কাজ করে যাওয়া শিক্ষাবিদ কাজি আতিকুর রহমানকে প্রথমে উত্তরীয়, শরাই সহ মানপত্র দিয়ে সংবর্ধনা জানান আনোয়ার হুসেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, কাজি আতিকুর রহমান এক মহান ব্যক্তি, যিনি আছিমিয়া এমভি স্কুল প্রতিষ্ঠা সহ আছিমগঞ্জ পাথারকান্দির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা করতে তিনি বিশেষ অবদান রয়েছে। এছাড়া সমাজ সেবায় যথেষ্ট অবদান রয়েছে কাজী আতিকুর রহমানের। তিনি এও বলেন, এমন মহান ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দিতে পেরে তিনি নিজেকে গর্ভ অনুভব করার পাশাপাশি অনেক আনন্দিত হয়েছে। আনোয়ার হুসেন আরও বলেন, কাজি আতিকুর রহমান অবদান কোন দিন ও ভুলার নয় বলে মত ব্যক্ত করেন আনোয়ার হুসেন। তিনি আরও বলেন, করিমগঞ্জ জেলায় এক মাত্র অসমিয়া ভাষা জ্ঞান পরীক্ষা কেন্দ্রের বিগত ২৬ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন কাজি আতিকুর রহমান, এই পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করে আজকের দিনে করিমগঞ্জ জেলার কোনায় কোনায় সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত রয়েছেন অনেকেই, যেটার সম্পূর্ণ অবদান কাজি আতিকুর রহমানের বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন শিক্ষক আনোয়ার হোসেন।
শিক্ষক খয়ের উদ্দিন বলেন, বিশেষ করে আছিমগঞ্জ পাথারকান্দি এলাকায় যখনই কোন সমস্যার সৃষ্টি হতো, তখনই কাজি আতিকুর রহমানের দ্বারা নিরসন হতো, এরকম এক ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা দিতে পারায় সত্যি খুশি হলাম বলে মন্তব্য করেন খয়ের উদ্দিন। কবি আসহাব উদ্দিন তালুকদার বলেন, কাজি আতিকুর রহমান নেতৃত্বে ও অসম সাহিত্য সভার উদ্যোগে বরাক ভ্রম্মপুত্র সমন্বয়ের লক্ষে অসম সাহিত্য সভার তৎকালীন সভাপতি মুহিম বরার উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালে আছিমগঞ্জে, সেই ঐতিহাসিক সম্মেলনে কাজি আতিকুর রহমান আমাকে দিয়ে কবিতা পাঠ করিয়ে মুহিম বরার উপস্থিতিতে শিশু কবি হিসেবে স্বীকৃতি পাই সেই দিন। আছহাব উদ্দিন আরও বলেন, কাজি আতিকুর রহমান তার শিক্ষাগুরু, তাঁর হাত ধরে তার সাহিত্যিক জীবনের পথ চলা আরম্ভ হয়েছিল, আজ অবধি সাহিত্যিক চর্চা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে তিনি। শিক্ষক সাব্বির খান বলেন, কাজি আতিকুর রহমান সমাজের এক মহান ব্যক্তি, তাঁর অবদান গ্রাম করিমগঞ্জের কোণায় কোণায় জড়িয়ে রয়েছে, পিছিয়ে পড়া আছিমগঞ্জ পাথারকান্দিতে বিশেষ করে শিক্ষা জগতে উনার অবদান অনস্বীকার্য।
এদিন পাথারকান্দি মধুরবন্দ খিলরবন্দ এলাকায় বাসিন্দা তথা নয়টি স্কুলের প্রতিষ্ঠিতা আহমেদ আলিকেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয় তাঁকে উত্তরী ও মালা পরিয়ে সংবর্ধনা জ্জাপন করেন শিক্ষক তথা কবি আনোয়ার হোসেন। সবশেষে আমছুর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজি সাদিক আখতার ও আমছুর করিমগঞ্জ জেলা সভাপতি মওলানা বাহারুল ইসলাম, আছিমিয়া এমভি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল হক, শিক্ষক নজমুল ইসলাম লস্কর, শিক্ষক বিলাল আহমদ ও শিক্ষিকা নমিতা দাস, আব্দুল হামিদ সহ উপস্থিত সবাই কাজী আতিকুর রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করেন। সব শেষে কবি আছহাব উদ্দিন তালুকদার এর নিজের লেখা তিনটি গ্রন্থ, ঐচিত্যবোধ, নিঃশর্গ ধ্বনি ও আত্মদর্শন গ্রন্থ গুলি আছিমিয়া এমভি স্কুলের গ্রন্থাগারের সংরক্ষণ করে রাখার জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল হক ও সহ শিক্ষকদের হাতে তুলে দেন কবি আসহাব উদ্দিন তালুকদার।