জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নেই সাংসদ-বিধায়কের, ধুবড়ির উন্নয়ন করছে বিজেপি : হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
বরাক তরঙ্গ, ২ মে : কংগ্রেস সরকারের আমলে ধুবড়ি জেলার জনগণ আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন, কোনও নিরাপত্তা ছিল না সাধারণ মানুষের। কেননা কংগ্রেস সরকার জনগণকে পাত্তা দেয়নি। আর যখন বিজেপি সরকার গঠিত হয় রজ্যে, তখন জনগণ নিরাপদ বোধ করে এবং জেলায় উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়। শুক্রবার গোলকগঞ্জে চিলারাই ময়দানে বিজেপির বিশাল নির্বাচনী জনসভায় কথাগুলো বলেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, কংগ্রেসের শাসনকালে আশাকর্মী, শিক্ষক, অঙ্গনওয়াড়ি চাকরির জন্য টাকা দিতে হতো। দালালের হাতে ৫ লক্ষ টাকা দিলে চাকরি মিলত। আবার যাদের চাকরি হতো না, তাদের টাকা ফেরৎ পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হতো দালালদের পেছনে। কারন দালাল না হলে সরকারি চাকরি পাওয়া দুষ্কর ছিলো। আজ কংগ্রেসের নেতারা ধুবড়ি শহরে জায়গায় জায়গায় জমি কিনেছে, বিল্ডিং বানিয়েছে, গাড়ি, বাইক কিনেছে। এসব টাকা কোথায় পেয়েছে, নিজের কষ্টের উপার্জনের টাকায় নয়, সব দালালের কাছ থেকে পাওয়া টাকায়। বিজেপি সরকার আসার পরে চাকরির নামে দালাল বন্ধ হয়ে গেছে।
অসমে এবার বৈশাখ মাসে পঞ্চায়েত নির্বাচন চলছে। এবং বছরের শেষে অর্থাৎ চৈত্র মাসে বিধানসভা ভোট হবে। তার মানে আমাদের পঞ্চায়েত নির্বাচন জয়লাভ করতে হবে, আবার বিধানসভা নির্বাচন জয়লাভ করতে হবে। গতবার বিধানসভা নির্বাচনে আমরা অল্প ভোটে হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু এইবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১টি জেলা পরিষদ ও ৩টি আঞ্চলিক পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেলাম। বাকী প্রার্থীরা আশাকরি আপনাদের ভোটে বিজেপি-অগপ জয়লাভ করবে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে লোকসভা ভোট হয়ে গেল, ধুবড়ির জনগণ একজন প্রার্থীকে বিপুল ভোটে সাংসদ বানালেন, যদিও ওই সাংসদকে জনগন দেখতে পান না, একই অবস্থা ধুবড়ির বিধায়কের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নাই। তবে কাজ করছে কোন দল এমন প্রশ্ন তুলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলার উন্নয়নের কাজ করছে বিজেপি দল। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী কখনও ধুবড়ি আসেননি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কয়েক মাস অন্তর ধুবড়ি আসি। তাই ধুবড়ি জেলার মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য সরকার দুটি কাজ করছে। বলেন, দীর্ঘতম সময়ের জন্য অসমে তরুণ গগৈ সরকার ছিল, আমি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি ২০২১ সালে। আপনার বিচার করবে, কংগ্রেসের আমলে রাস্তাঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কী ছিল এবং বর্তমান অবস্থা কী।

তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, গৃহশিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হবে। মোদি সরকারের আমলে অসমে বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে। কংগ্রেসের সময়, লুঙ্গি, সূতা কম্বল, ধুতির উন্নয়ন হয়েছে। আর মোদি সরকার অরুণোদয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, আয়ুষ্মান কার্ড, রেসন কার্ড দিয়েছে। আরও বলেন মুখ্যমন্ত্রী, অসমে এই ৫ বছরে বহু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। বর্তমান অসমে গোলা বারুদ, অপহরন বন্ধ হয়ে গেছে। বিদেশ থেকে বহু পর্যটক আসছে। সব শেষে বলেন, কয়েক দিন আগে পহেলগাঁওয়েরর ঘটনায় অসমবাসী ব্যাথিত। সেসময় অসমে কিছু লোক পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে জয়গান করছে, ইতোমধ্যে ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসমের লবন খেয়ে পাকিস্তানের জয়গান করা পিটিয়ে পা ভেঙে দেব বলে হুঁশিয়ার করে দেন। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি রঞ্জিতকুমার রায়, প্রাক্তন বিধায়ক অশ্বিনীকুমার রায়, অগপর বিশ্বজিৎ কলিতা, বিশ্বজিৎ রায়, গোবিন্দ অধিকারী, ধুবড়ির পুরপতি দেবময় সান্যাল প্রমুখ।