শহিদ দিবস উপলক্ষে বরাকে আসছেন অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধি দল, স্বাগত জানাল বিডিএফ
বরাক তরঙ্গ, ১৬ মে : মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে ১৯৬১ এর ১৯শে মে শহিদ হয়েছিলেন বরাক উপত্যকার এগারো জন সত্যাগ্রহী। এই ঘটনার প্রায় ৬৫ বছর পর এই প্রথম এবছরের ১৯ শে মে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে বরাকে আসছেন অসম সাহিত্য সভার এক প্রতিনিধি দল। তাঁদের এই সফরকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বাংলাভাষীদের আরও কিছু দাবি নিয়ে সরকারের তাঁদের সঙ্গে তদ্বির করার আবেদন জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

শুক্রবার বিডিএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন করে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, অসম সাহিত্য সভার পক্ষ থেকে আগামী ১৭ থেকে ১৯ মে অবধি বরাক উপত্যকা সফরের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। তিনি আশা করেন দুই উপত্যকার দুই ভাষিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে তার অবসানে অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধিদের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বিডিএফ এর পক্ষ থেকে এর আগেই বরাকে অসম সাহিত্য সভার অধিবেশনের আয়োজন এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বাংলাভাষীদের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ অধিবেশন অনুষ্ঠিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, একমাত্র সঠিক অর্থে সাংস্কৃতিক আদান প্রদানের মাধ্যমেই দুই ভাষিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় রচিত হতে পারে। তাই অসম সাহিত্য সভার এবারের সফর সেই উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক হবে বলে তিনি মনে করেন।

বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক দত্তরায় আরও বলেন, শিলচর রেলস্টেশন ভাষা শহিদদের রক্তেরাঙা হয়েছিল তার নাম পরিবর্তন করে ভাষা শহিদ স্টেশন করার ব্যাপারে অনেকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন বরাক উপত্যকাবাসী। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেলমন্ত্রকের সবুজ সংকেত স্বত্ত্বেও দিশপুরের নিষ্ক্রিয়তায় এই ফাইলটি আটকে আছে। তিনি অসম সাহিত্য সভার কর্মকর্তাদের এই ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী ১৯ মে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রদীপ দত্তরায় বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বিগত দিনে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি ভাষা শহিদ স্মারক সংগ্রহশালা তৈরির প্রস্তাব রেখেছিলেন। পরে এই ব্যাপারে সরকারি অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পাঁচ বিঘা জমিও দান করা হয়। কিন্তু এই প্রকল্পের আর কোন অগ্রগতি হয়নি। তাই এই ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধিদের এরজন্যও সরকারের সাথে তদ্বির করার আবেদন জানিয়েছেন। এও বলেন, বাংলাকে রাজ্যের সরকারি সহযোগী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবার ব্যাপারটিও ঝুলন্ত। বড়ো ভাষাকে সহযোগী ভাষার মান্যতা দেবার জন্য সরকারকে তাঁরা অবশ্যই অভিনন্দন জানিয়েছেন, কিন্তু পাশাপাশি রাজ্যের বাংলাভাষীদের এই গনদাবি পুরণে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি বলেন, এইসব পদক্ষেপ গৃহীত হলে রাজ্যের বাংলাভাষীরা অবশ্যই আন্তরিক ভাবে খুশী হবেন এবং ভাষিক সমন্বয়ের সেতু আরও দৃঢ় হবে।