বরাকের রাজনীতিতে কিছু সংখ্যক কালেক্টারদের জন্ম দেওয়া হয়েছে : অখিল
বিশ্বজিৎ আচার্য, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৫ নভেম্বর : তিন দিনের কার্যসূচি হাতে নিয়ে বরাক উপত্যকা সফরে উপস্থিত হয়ে রাইজর দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সোমবার শিলচরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করেন। বরাক উপত্যকার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, হিন্দু-বাঙালিদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে আসলেও বরাকে কোন ধরনের উন্নয়ন করেনি শাসক দল বিজেপি।
বরাকের আসন সংখ্যা ১৫থেকে কমিয়ে ১৩টি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বরাকের রাজনীতিতে কিছু সংখ্যক কালেক্টারদের জন্ম দিয়ে বিভিন্ন সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ অখিল গগৈর। অসমিয়া ও বাঙালির মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই করেনি মুখ্যমন্ত্রী শর্মা। শিলচর পুরসভার নির্বাচন বন্ধ করে রাখা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জির বাস্তবায়ন করা হয়নি, গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর নির্মাণের নামে লক্ষাধিক চারাগাছ ধ্বংস করে মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া সহ বরাকের হিন্দু বাঙালিদের শুধু রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও মিনি সচিবালয়, শিলচরে উড়োপুল নির্মাণ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন,বরাক নদীর খনন, মহাসড়ক নির্মাণ, রেল যোগাযোগ, শিলচর মেডিক্যাল কলেজের পরিবেশ ও পরিকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক দল বিজেপিকে কাটগড়ায় দাঁড় করিয়ে এদিন তীব্র সমালোচনা করেছেন অখিল গগৈ। শুধু তাই নয় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর ১লক্ষ চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে বরাকের কয়জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে এবং এখানের জলন্ত সমস্যা সমাধানে শাসক দল কিকি কাজ করেছে তার শ্বেতপত্র আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে তুলে ধরতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন অখিল গগৈ।
এদিকে অসম উপ-নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, উজান অসমের খিলঞ্জীয়া মানুষ এবার বিজেপিকে ছেড়ে দিয়েছেন।যে মুখ্যমন্ত্রী মিঞা ভোট লাগবে না বলে বিগত দিনে হুংকার দিয়েছিলেন সেই মুখ্যমন্ত্রী এখন চাচা-ভাতিজার খেলা খেলছেন। বিজেপি ধীরে ধীরে মিঞার দলে পরিণত হয়েছে দেখে আরএসএসের প্রবীণ সদস্যরা বর্তমানে ভয় পাচ্ছেন বলে এদিন মন্তব্য করেছেন অখিল গগৈ।উপ-নির্বাচনে ৫টি আসনে জয়লাভ করলেও, আসামের খিলঞ্জীয়া মানুষ যে বিজেপিকে এবার ভোট দেয়নি তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড নির্বাচন নিয়ে অখিল গগৈ জানান, আসাম থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা লুন্ঠন করে সেখানে খরচ করেও বিজেপি ঝারখণ্ড নির্বাচনে জয়ী হতে পারেনি। “রুটি-বেটি-মাটি” স্লোগানে সেখানে হিন্দু-মুসলমান কার্ড খেলেও ঝাড়খণ্ডের ৪টি আসনে হেরেছে বিজেপি। হিমন্তর বাংলাদেশি ইস্যু সেখানে ফ্লপ হয়েছে এবং ঝাড়খণ্ডের মানুষ বিজেপিকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন অখিল গগৈ। আগামী ২০২৬ এর নির্বাচনে বিজেপিকে অসম থেকে বিসর্জন দিতে রাইজর দল মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। এবং অসমে রাইজর দলের সরকার গঠন হলে ৬ মাসের মধ্যে ডি-ভোটার সমস্যার স্থায়ী সমাধান সহ বরাকের উন্নয়নকে দ্রুত গতিতে তরান্বিত করারও এদিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অখিল গগৈ।