বাঙালি বিরোধী সুগভীর চক্রান্তেরবিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক বরাকবঙ্গের
বরাক তরঙ্গ, ৬ আগস্ট : বাঙালির জাতি পরিচয় এবং বাংলা ভাষা নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য যে মন্তব্য করেছেন তাকে আপত্তিকর, অপমানজনক এবং সংবিধানবিরোধী বলে আখ্যায়িত করল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি একটি সমৃদ্ধ ভাষা ও ঐতিহ্যবাহী জাতিসত্তার পরিচয় নিয়ে যেভাবে প্রশ্ন তুলেছেন তা দেশ জুড়ে চলতি বাঙালি বিরোধী চক্রান্তের সঙ্গেই সম্পৃক্ত বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে এই অভিমত পোষণ করে দল মতের ঊর্ধ্বে ওঠে সব সংবেদনশীল ব্যক্তি ও সংগঠনকে প্রতিবাদে মুখর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বরাকবঙ্গ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান রেখে বলেছেন, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি এই রব তুলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত বাঙালির পীঠে বিদেশি তকমা সেটে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নিপীড়ন, উৎখাত ও সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার ক্রমাগত ঘটনায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দিল্লি পুলিশ বাংলাভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা প্রতিপন্ন করার যে চেষ্টায় মেতেছে তার স্বপক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে অমিত মালব্য ”বাংলা ভাষা বলে এমন কোনও একক ভাষা নেই, নেই তার ভাষাগত ঐক্য” এই আপত্তিকর মন্তব্য করে সিলেটি উপভাষাকে বাঙালি কাছে বোধগম্য নয় বলে যে মন্তব্য করেছেন যেটা তাঁর ইতিহাস, ভূগোল এবং জনবিন্যাসের চরিত্র সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয় তুলে ধরেছে।
বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক দত্ত করেছেন এদেশে সিলেটি মূলের বিপুল সংখ্যক মানুষ বসবাস করছেন। ১৮৭৪ সালে সিলেট জেলা অসমের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে রাজনৈতিক চক্রান্তে গণভোটের প্রশ্নে সিলেট জেলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের দিনগুলোতে বৌদ্ধিক ও আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকর্মে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর অঙ্গ সিলেটিদের যে ঐতিহ্যময় ভূমিকা রয়েছে সে সম্পর্কে একটি সর্বভারতীয় দলের কর্তার কোনও ধারণা নেই নয়তো তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সত্য চেপে যেতে চেয়েছেন। তবে রাজ্যসভার সদস্য কণাদ পুরকায়স্থ এবং প্রাক্তন সাংসদ রাজদীপ রায় এ সম্পর্কে যে প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়েছেন তার প্রশংসা করে সাধারণ সম্পাদক দত্ত সব জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা আহ্বান জানিয়েছেন।