একের পর এক ধর্ষণ-খুনের পরই মহাকুম্ভে পূণ্যস্নানে অভিযুক্ত, ট্রেন থেকে গ্রেফতার
২০ ফেব্রুয়ারি : ধর্ষণের ঘটনায় দোষীর মৃত্যুদণ্ড খারিজ করেছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।মুক্তির পর ছাড়া পেয়েই ফের এক মূক ও বধির নাবালিকাকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশের রাজগড় এলাকার এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযুক্তের নাম রমেশ সিং। রমেশের বিরুদ্ধে একাধিক বার নাবালিকাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু বারবারই সে মুক্তি পেয়ে গিয়েছে। এবার মহাকুম্ভে স্নান করে জয়পুর যাওয়ার পথে ফের তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২০০৩ সালে মধ্যপ্রদেশের সহজপুর জেলার মুবারিকপুরে ৫ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে রমেশের বিরুদ্ধে। পুলিশের তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ১০ বছরের সাজা হয় তার। ২০১৩ সালে মুক্তি পেয়ে ফের ২০১৪ সালে আস্থা এলাকায় এক ৮ বছরের নাবালিকাকে অপহরণ করে রমেশ। পরে ওই নাবালিকাকে নির্মমভাবে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ আবার তাকে গ্রেফতার করে। দোষ প্রমাণিত হওয়ায় এবার নিম্ন আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
কিন্তু ২০১৯ সালে হাইকোর্ট জানায়, রমেশের আইডেন্টিফিকেশন প্যারেডের সময় নির্যাতিতার বাবা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি কোনও ভাবে আইডেন্টিফিকেশন প্যারেডের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে থাকতে পারেন বলে মনে করে আদালত। আদালতের এই ভূমিকায় ফের একবার মুক্তির স্বাদ পায় অভিযুক্ত।
এবার ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সে আবার অপরাধে লিপ্ত হয়। মাসের প্রথম দিকেই মধ্যপ্রদেশের নরসিংগড় থেকে ১১ বছরের এক মূক ও বধির নাবালিকা নিখোঁজ হয়। পরের দিন ঝোপের মধ্যে ওই গুরুতর জখম অবস্থায় ওই নাবালিকাকে পাওয়া যায়। শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের প্রমাণ মেলে। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তাকে দ্রুত ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে ভর্তি কার হয়। সেখানে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্যাতিতার মৃত্যু হয়।
পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। ৪৬টি জায়গায় লাগানো ১৩৬টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘটনাস্থলের আশপাশে এক ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ জানতে পারে ওই ব্যক্তিই রমেশ সিং। এক অটোচালকও জানায়, রমেশ কুরাওয়ার থেকে নরসিংগড় পর্যন্ত তার অটোতে করে এসেছিল। এরপরই পুলিশ তদন্ত চালিয়ে প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলা চত্ত্বরে অভিযুক্তের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। জানা যায়, সেখানে কুম্ভস্নান করতে গিয়েছিল রমেশ। পরে জয়পুরগামী একটি ট্রেন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজগড়ের পুলিশসুপার আদিত্য মিশ্র জানিয়েছেন, পুলিশ এই ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্ত করছে। প্রতিটি তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

